Advertisment

'ঝামেলা একেবারেই পছন্দ করত না'! কোচি বিস্ফোরণে অভিযুক্তের বয়ানে অবাক স্থানীয়রা

পুলিশ, অভিযুক্ত মার্টিনের দাবি যাচাই করে দেখছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kerala, kerala blasts, kalamassery, kochi blasts, kerala blast death, kerala blast injured, amit shah, pinarayi vijayan, indian express news

কোচি বিস্ফোরণে অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিতে অবাক স্থানীয়রা

কেরলের কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে আত্মসমর্পণ করলেন ডোমিনিক মার্টিন নামে এক ব্যক্তি। তিনি ত্রিশুরের কোডাকারা থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। কোচির কালামাসেরির কনভেনশন হলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের দায় ওই ব্যক্তি স্বীকার করেছেন। এই বিস্ফোরণে অন্তত তিনজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের সময় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের যিহোবার সাক্ষী সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার সদস্য একটি প্রার্থনা সভার জন্য জড়ো হয়েছিলেন। পুলিশ, অভিযুক্ত মার্টিনের দাবি যাচাই করে দেখছে।

Advertisment

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কেরালার কোচিতে কনভেনশন সেন্টারে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সমাবেশে ব্যাপক বিস্ফোরণের পরে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সব ধরনের সাহায্য'র আশ্বাস দিয়েছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেছেন অমিত শাহ। বিস্ফোরণের সময় সেখানে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিস্ফোরণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫২ জন আহত হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে এটি একটি আইইডি বিস্ফোরণ। প্রত্যক্ষদর্শীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে, কনভেনশন সেন্টারের মধ্যে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটেছে, প্রার্থনা শুরু হওয়ার পর সকাল ৯টা ৩০ নাগাদ। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ঘটনার পর সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন যে এটি ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক এবং পুলিশ গোটা ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজয়ন বলেন, ‘রাজ্যে পুলিশের ডিজি-সহ ঊর্ধ্বতন কর্তারা সবাই কোচিতে চলে গেছেন। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

কোচি বিস্ফোরণের অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিতে হতবাক স্থানীয়রা। কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণের কয়েক ঘন্টা পরে তিনজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ডোমিনিক মার্টিন, যিনি বিস্ফোরণের পিছনে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তিনি শনিবার রাতে তার স্ত্রীকে বলেন, রবিবার সকালে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। ভোর ৫ টা নাগাদ কোচির থাম্মানামে ভাড়া বাড়ি ছেড়ে চলে যান।

বিস্ফোরণের দিন তিনি খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন। উঠেই বাইক নিয়ে বেরিয়ে যান। তার স্ত্রী ভেবেছিলেন তিনি বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন কারণ আগের রাতে তিনি সেকথাই তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন। কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণের কয়েক ঘন্টা পরে, এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। মার্টিন এবং তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যাসহ পাঁচ বছর ধরে ২ বেডরুমের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। পরিচিত এক ব্যক্তি জলিল বলেন, “তিনি ঝামেলা পছন্দ করতেন না। তার বেশি বন্ধু-বান্ধব ছিল না। তার কার্যকলাপ সন্দেহজনক ছিল না,”।

জলিল যোগ করেছেন, “আমি সকাল থেকে বিস্ফোরণের খবরটি দেখছিলাম। হঠাৎ বিকেলে, তার স্ত্রী নেমে এসে আমাকে তার ভিডিও সম্পর্কে বলেন। মার্টিনের স্ত্রী গোটা ঘটনার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী"। তার স্বীকারোক্তি ও গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তার স্ত্রী ও কন্যা বাকরুদ্ধ। “ওরা কিছু খায়নি। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। মার্টিন যে কাজটি করেছেন তার জন্য স্ত্রী-সন্তান কেন তার ফল ভোগ করবে। কখনো কারুর সঙ্গে তার কোন ঝামেলা ছিল না"।

কেরল পুলিশের এডিজিপি অজিত কুমার জানিয়েছেন, ডোমিনিক মার্টিন নামে এক ব্যক্তি ত্রিশুরের কোডাকারা থানায় গিয়ে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে। ওই ব্যক্তি কালামাসেরির যিহোবার সাক্ষী সংগঠনের সদস্য। সে সত্যি বলছে কি না, পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ত্রিশুরের জনপ্রতিনিধি তথা কেরলের সহযোগিতা মন্ত্রী ভিএন ভাসাভান বলেছেন, আহতদের বেশিরভাগই এরনাকুলাম এবং পার্শ্ববর্তী কোট্টায়াম এবং ত্রিশুর জেলার বাসিন্দা। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ জানিয়েছেন, কনভেনশন সেন্টার বিস্ফোরণে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২। তার মধ্যে ১৮ জন আইসিইউতে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২ বছর বয়সি এক শিশু-সহ ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

কেরল কনভেনশন সেন্টারে এই বিস্ফোরণের পর রাজধানী দিল্লিতে গির্জা এবং মেট্রো স্টেশনগুলোর চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না-করার শর্তে এক প্রবীণ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছন, শহরের প্রধান বাজার, গির্জা, মেট্রো স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন ও অন্যান্য জনবহুল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সুরক্ষা দলগুলোকে উত্তরপ্রদেশের দিক এবং হরিয়ানার দিক থেকে সীমান্ত এলাকাজুড়ে ব্যারিকেড দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকে পুলিশ, রাইডার এবং পিসিআর বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে প্রাপ্ত কোনও তথ্য উপেক্ষা না-করেন। আমরা ইতিমধ্যেই ভিড়ে উপচে পড়া বাজারগুলোয় কড়া নজর রাখছি। উৎসবের মরশুমের কথা বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’ সূত্রের খবর, দিল্লি পুলিশের বিশেষ বাহিনী কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

Blast kerala
Advertisment