রাশিয়ান জেট যুদ্ধবিমানের সঙ্গে ইউএস ড্রোন সংঘর্ষের ভিডিও সামনে আনল পেন্টাগন। পেন্টাগনের তরফে জানানো হয়েছে '৪২ সেকেন্ডের ভিডিওটি ক্লিপটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে একটি রাশিয়ান Su-27যুদ্ধবিমান মার্কিন MQ-9 ড্রোনের পিছনের দিক থেকে এগিয়ে আসছে এবং মার্কিন ড্রোনে ইচ্ছাকৃতভাবে জ্বালানি ফেলছিল রুশ জেট যুদ্ধবিমান'।
কৃষ্ণ সাগরে ভয়াবহ সংঘর্ষ! রুশ যুদ্ধবিমানের ‘তাণ্ডবে’ গুঁড়িয়ে গেল ‘মার্কিন ড্রোন’, এনিয়ে রাশিয়া-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম উত্তেজনা। পেন্টাগন বলেছে যে ৪২ সেকেন্ডের যে ভিডিওটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে একটি রাশিয়ান Su-27 যুদ্ধবিমান মার্কিন MQ-9 ড্রোনের পিছনের দিকে এসে মার্কিন ড্রোনে ইচ্ছাকৃতভাবে জ্বালানি ফেলে।
রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে মার্কিন ড্রোনের তাদের মুখোমুখি হওয়ার পর প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন এবং জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ চেয়ারম্যান জেনারেল ড. মার্ক মিলি আমেরিকান ড্রোন ধ্বংস করার বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনা করেছেন।
কৃষ্ণ সাগরের উপরে মঙ্গলবার মার্কিন ড্রোনের সঙ্গে ও রুশ যুদ্ধবিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। রুশ সুখোই – ২৭ জেট বিমানের সঙ্গে একটি মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনের ধাক্কা লাগে।
জানা যায়, ইউক্রেন সীমান্তের খুব কাছে আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় এই দুই শক্তিধর দেশের ফাইটার জেট ও ড্রোনের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমেরিকার তরফে সেই সংঘর্ষের ভিডিয়ো ফুটেজ সামনে আনা হয়েছে। ইউক্রেন সীমান্তের খুব কাছে আন্তর্জাতিক জলসীমার উপর, আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় এই ঘটনা ঘটেছে। এই ধরণের ঘটনাকে রাশিয়ার ‘বেপরোয়া পদক্ষেপ’ বলেও উল্লেখ কর হয়েছে। যদিও প্রথম থেকেই এই ঘটনায় দায় এড়িয়েছিল রাশিয়া।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে চড়ছে উত্তেজনার পারদ। মার্কিন সেনাবাহিনী সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কৃষ্ণ সাগরে একটি রাশিয়ান ফাইটার জেট এবং একটি আমেরিকান ড্রোনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে উত্তেজনার পারদ আরও চড়বে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক মহল।
ঘটনা সম্পর্কে, মার্কিন সেনাবাহিনীর ইউরোপীয় কমান্ড বলেছে যে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) একটি রাশিয়ান SU-27 যুদ্ধবিমান কৃষ্ণ সাগরের উপর আমেরিকান MQ-9 রিপার ড্রোনের সঙ্গে সংঘর্ষে মুখে পড়ে। এই ঘটনাটি ঘটে যখন আমেরিকার রিপার ড্রোন এবং দুটি রাশিয়ান যুদ্ধবিমান SU-27 কৃষ্ণ সাগরের উপর দিয়ে আন্তর্জাতিক জলসীমায় চক্কর খাচ্ছিল।
এই পুরো বিষয়ে ইউএস এয়ারফোর্স জেনারেল জেমস হেকার বলেন, ‘আমাদের এমকিউ-৯ আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় রুটিন টহল চলাকালীন রুশ বিমানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এর পর আমাদের ড্রোন সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর সঙ্গে তিনি জানান, এই ঘটনায় রাশিয়ার বিমানটিও বিধ্বস্ত হয়’। পাশাপাশি ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দায়ি করা হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে, আমেরিকার রিপার ড্রোন এবং রাশিয়ার দুটি SU-27 যুদ্ধবিমান কৃষ্ণ সাগরের উপর দিয়ে প্রদক্ষিণ করার সময় এই ঘটনা ঘটে। মার্কিন সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে একটি রাশিয়ান জেট ইচ্ছাকৃতভাবে একটি আমেরিকান ড্রোনকে ‘লক্ষ্যবস্তু করে’। হঠাৎ জেটটি ড্রোনের সামনে এসে পড়ে ফলেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে দাবি আমেরিকার। এরপর ড্রোনটিকে কৃষ্ণ সাগরে অবতরণ করতে বাধ্য করা হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সীমান্ত কৃষ্ণ সাগরেই মিলিত হয়েছে।
ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের কারণে গত কয়েক মাস ধরে এ এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইউক্রেন যুদ্ধের সময় কৃষ্ণ সাগরের উপর দিয়ে রাশিয়া ও আমেরিকান একাধিক যুদ্ধ বিমান চক্কর খেলেও আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। রাশিয়ার পক্ষ থেকে অবশ্য এখনও এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে এই মার্কিন দাবি গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে।
দুদিন আগে কৃষ্ণ সাগরে আমেরিকার একটি ড্রোন ও একটি রুশ বিমানের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এদিকে মার্কিন সেনাবাহিনী একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। এটি রাশিয়ান যুদ্ধবিমান ও আমেরিকান ড্রোনের সংঘর্ষের ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে। মার্কিন সেনাবাহিনী রুশ যুদ্ধবিমানের এহেন কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছে। পাশাপাশি অভিযোগ করা হয়েছে রুশ যুদ্ধবিমান ইচ্ছাকৃতভাবে মার্কিন ড্রোনের ওপর জ্বালানি ছুঁড়ে দেয় যার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয় মার্কিন ড্রোন।
মার্কিন ইউরোপীয় কমান্ড তার অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ভিডিও টুইট করেছে। পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে মার্কিন ড্রোনটি আকাশে উড়ছে যখন একটি রাশিয়ান যুদ্ধবিমান পেছন থেকে এসে ড্রোনটির ওপর জ্বালানি ফেলছে। তারপর ভিডিও বন্ধ হয়ে যায়। মার্কিন সেনাবাহিনীর দাবি, রুশ বিমানের জ্বালানির কারণে ড্রোনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কৃষ্ণ সাগরে ভূপাতিত হয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে। আমেরিকা রাশিয়ার উপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে। এ কারণে জঙ্গি বিমানে ড্রোন আঘাত হানার ঘটনা ঘটেছে।