Kerala Wayanad landslide: সময় যত গড়িয়েছে ততই বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। মঙ্গলবার সকালে কেরলের ওয়ানাদ জেলার মেপ্পাদির কাছে পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক ভূমিধসের জেরে মৃতের সংখ্যা বেডে দাঁড়িয়েছে ১৫৬। বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। কেরল স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (কেএসডিএমএ) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফায়ারফোর্স এবং ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) টিমকে মোতায়েন করেছে। কান্নুর ডিফেন্স সিকিউরিটি কর্পসের দুটি দল-সহ একটি অতিরিক্ত এনডিআরএফ দলও সহায়তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারী বর্ষণের কারণে উদ্ধার কাজ বেশ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। মলপ্পুরমের চালিয়ার নদী থেকে অন্তত ১৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও বেশ কয়েকজন ভেসে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, নদী থেকে আরও মৃতদেহ তোলা হচ্ছে। এদিকে মুন্ডক্কাইতে বেশ কিছু বাড়ি, দোকান ও যানবাহন ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছে। ঘটনাস্থলে একটি সেতু ভেসে গেছে বলেই খবর। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন আশ্বস্ত করেছেন যে একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ, হেলিকপ্টারে করে লোকজনকে সরিয়ে নিতে এবং বিপর্যয়স্থলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হবে। পাশাপাশি, দুই দিনের শোকও ঘোষণা করেছে কেরল সরকার।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভূমিধসের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি সমবেদনা রয়েছে। আহতদের জন্য প্রার্থনা করছি।’ তিনি জানিয়েছেন যে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। দুঃখজনক এই ঘটনায় আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে কেরল সরকার। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে প্রতিটি মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়দের জন্য ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের জন্য মাথাপিছু দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা। এদিকে, বিরোধী দলের নেতা এবং ওয়ানাদের প্রাক্তন সাংসদ রাহুল গান্ধীও শোকাহত পরিবারগুলির প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি আশা করি যে আটকে পড়া ব্যক্তিদের শীঘ্রই উদ্ধার করা সম্ভব হবে… আমি প্রশাসনকে সমস্ত সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছি। কন্ট্রোল রুম, এবং ত্রাণ প্রচেষ্টার জন্য প্রয়োজনীয় কোনও সহায়তার বিষয়ে আমাদের জানাতেও অনুরোধ করেছি।’
কেরলের ওয়ায়ানাদ জেলার মেপ্পাদির কাছে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের পর অন্তত কমপক্ষে ১৫৬ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ভুমিধসের ঘটনায় কমপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন বলেই খবর৷
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা থাকলেও, শেষ মুহূর্তে তাদের ওয়ানাদ সফর স্থগিত করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী এক্স-এ এক পোস্টে জানিয়েছে ".. অবিরাম বৃষ্টি এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষের তরফে আমাদের জানানো হয়েছে যে আমরা সেখানে অবতরণ করতে পারব না,"।
উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করার জন্য সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা সুরক্ষা কর্পস থেকে ২০০ সেনা এবং একটি মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়েছে দুর্ঘটনা কবলিত এলাকায়। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেছেন যে ওয়ানাদে 45টি শিবির স্থাপন করা হয়েছে, ৩হাজার জনেরও বেশি লোককে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওয়েনাডে আসব-রাহুল
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লিখেছেন, "প্রিয়াঙ্কা এবং আমি ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ওয়ানাদ যাচ্ছিলাম। কিন্তু একটানা বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আমরা সেখানে অবতরণ পারব না বলে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়। আমি ওয়ানাদের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে আসব। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় সহয়তা প্রদান করা হবে"।
একই সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী লিখেছেন, আমার ওয়ানাদের ভাই ও বোনেরা, যদিও আমরা বুধবার ওয়েনাডে আসতে পারব না, তবে এই দুঃখের সময়ে আমাদের চিন্তাভাবনা আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা এই কঠিন সময়ে আপনার জন্য প্রার্থনা করছি।
এর আগে, ওয়ানাদের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেছিলেন যে ওয়ানাদের মেপ্পাডির কাছে ভূমিধসের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ দেখে আমি গভীরভাবে দুঃখিত। তিনি বলেন, আমি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্ধার ও চিকিৎসার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। পাশাপাশি মৃতদের পরিবারকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই দুর্ঘটনায় যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে তাদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা।