গত ২৮ মার্চ ক্যাগ রিপোর্ট পেশ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। ২০২০-র মার্চ এবং ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার 'ফিসকাল রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট' (এফআরবিএম আইন) সংশোধন করেছে। যার প্রভাব ২০১৯০-২০ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ পর্যন্ত পড়বে। কিন্তু, আচমকা কেন আইন সংশোধনের প্রয়োজন পড়ল রাজ্য সরকারের? সেই কারণটাও ধরা পড়েছে ক্যাগ রিপোর্টে। যা বলছে, রাজ্যে আর্থিক মাপকাঠি হিসেবে রাজস্বকে দেখানো হয়েছে। আর, আর্থিক ঘাটতি ২০১৬-২১ ক্রমশই বাড়ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই আর্থিক ঘাটতি বৃদ্ধির কারণ হল- বছরের পর বছর ধরে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি। যা সামলাতে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে বাজার থেকে ঋণ নেওয়া অর্থের ৫৮.৮৪ শতাংশই রাজস্ব খাতে দেখানো হয়েছে। এতে সম্পত্তি সৃষ্টি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। আর, রাজ্যের বকেয়া সরকারি ঋণের পরিমাণ ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ১২.৯২ শতাংশ বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী তিন, পাঁচ এবং সাত বছরে এই বকেয়া ঋণের পরিমাণ বেড়ে হবে ১৫.৪৯, ২৬.৬০ এবং ৪১.৪২ শতাংশ। সব মিলিয়ে এই বকেয়া সরকারি ঋণের মোট পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ৪,২৪,২৪৭ কোটি টাকা।
ক্যাগ রিপোর্ট আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে স্পষ্ট করেছে। তা হল, রাজ্যের ৬৫টি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা তাদের বার্ষিক আর্থিক রিপোর্ট ক্যাগের কাছে জমা দিয়েছে। কিন্তু, দুটি লিগাল সার্ভিস অথরিটি রিপোর্ট জমা দেয়নি। এই প্রথম না। ১৯৯৮ সালে জন্মলগ্নের পর থেকে ওই দুই সংগঠন তাদের বার্ষিক আর্থিক রিপোর্ট ক্যাগের কাছে জমা দিচ্ছে না। শুধু ওই দুটি লিগাল সার্ভিস অথরিটিই নয়। ক্যাগ রিপোর্টে ধরা পড়েছে, ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাও তাদের রিপোর্ট ক্যাগের কাছে জমা দেয়নি। সব মিলিয়ে এই সব স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ২৮৮টি রিপোর্ট এখনও ক্যাগের কাছে জমা দেওয়া বাকি। যা রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের অপর্যাপ্ত অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এবং নজরদারি প্রক্রিয়ার ঘাটতিকেই তুলে ধরেছে।
Read story in English