এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় বছর দেশে শীতকালে প্রত্যাশিত ঠাণ্ডা পড়বে না, সৌজন্যে মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর ঘুর্ণীয়মান 'এল নিনো' (El Niño। এমনটাই বলছেন আবহাওয়াবিদরা। সোমবার দেশের আবহাওয়া দফতর এক বিবৃতিতে জানায়, চলতি শীতের মরসুমে দেশের প্রতিটি আবহাওয়া উপবিভাগে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গড় তাপমাত্রা রেকর্ড হবে। এই অবস্থা চলবে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত।
এল নিনো আবহাওয়াজনিত বিশেষ ঘটনা একটি। প্রশান্ত মহাসাগর অতিরিক্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠার ফলস্বরূপ এল নিনোর উদ্ভব, যা বিশ্বের উষ্ণায়নে প্রভাব ফেলে। ভারতবর্ষে এল নিনোর প্রভাব পড়ে মূলত মৌসুমি বায়ুর ওপর - যে বছরগুলিতে এল নিনোর আবির্ভাব ঘটেছে, প্রত্যেকবারই ভারতে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বর্ষা হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে এল নিনোর প্রকোপ ছিল উল্লেখযোগ্য।
পুণের ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের কথায়, "প্রশান্ত মহাসাগরের Equatorial sea surface temperatures (নিরক্ষীয় অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা) স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, কিন্তু বায়ুমণ্ডলে সেই অনুপাতে কোনও তারতম্য বোঝা যাচ্ছে না। শীতের শেষে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ নাগাদ, এল নিনো দুর্বল হয়ে আসবে। এই মুহূর্তে যা মনে হচ্ছে, শীতের শেষে এই এল নিনো খুব দীর্ঘস্থায়ী হবে না।"
আরও পড়ুন: Skin Care Tips: শীত আসছে, ডাক্তারবাবু বলছেন, ‘ত্বকের যত্ন নিন’
ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের হিসেবে জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, গুজরাত, মধ্য প্রদেশ, ছত্তিসগড়, বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিম বঙ্গ, ওড়িশা এবং তেলেঙ্গানা, এবং আবহগত উপবিভাগ সৌরাষ্ট্র, মারাঠওয়াড়া, বিদর্ভ এবং মধ্য মহারাষ্ট্র কোর কোল্ড ওয়েভ জোনের মধ্যে পড়ে।
আরেক আবহাওয়া দফতর আধিকারিকের মতে, চলতি শীতের মরসুমে এই জোনের ৮০ শতাংশে ন্যূনতম তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের তুলনায় ০.৫০ থেকে ০.৮৮ ডিগ্রি ওপরে। এই ৮০ শতাংশের মধ্যে পড়ছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্য প্রদেশ, এবং মহারাষ্ট্রের কিছু অংশ। এই অঞ্চলগুলিতে কোল্ড ওয়েভ বা শৈত্য প্রবাহের প্রকোপ থাকবে স্বাভাবিকের চেয়ে কম। জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, এবং উত্তরাখণ্ডে অবশ্যও স্বাভাবিক শীত পড়বে বলে জানান ওই আধিকারিক।