কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের একবার অনিশ্চিত পরিযায়ী শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ। তাঁদের নিয়ে কেন্দ্রের কী পরিকল্পনা? বৃহস্পতিবার জানতে চাইল শীর্ষ আদালত। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে লকডাউন চলছে। ফলে ফের কর্মক্ষেত্র ছেড়ে গ্রামে ফিরতে হচ্ছে শ্রমিকদের। সেই কারণেই উদ্বিগ্ন শীর্ষ আদালত। পরিযায়ী শ্রমিকরা পরিস্থিতি বিবেচনা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আবেদন করেছে বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এমআর শাহের বেঞ্চ। বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে কাজ নেই, টাকা নেই। কী ভাবে তাঁরা বেঁচে থাকবেন?’’
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্য, শুকনো রেশন, নগদ দেওয়া ও যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের মাধ্যমে মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলার আজ শুনানি ছিল। সমাজকর্মী অঞ্জলি ভরদ্বাজ, হর্ষ মন্দার ও জগদীপ ছোকরের দায়ের করা আবেদনে বলা, ‘গত বছর লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকরা আতঙ্ক ও অর্থনৈতিক সঙ্কটে কাটিয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতি আবারও মাথা তুলেছে।‘
আবেদনে আরও উল্লেখ, ‘প্রশাসনের সহানুভূতির অভাব রয়েছে। খাদ্য সুরক্ষা কর্মসূচিগুলি কেবল রেশন কার্ড রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্যই। গতবার, রেশন কার্ড নেই এমন ৮ কোটি পরিযায়ী শ্রমিককে আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের অধীনে শুকনো রেশন দেওয়া হয়েছিল। এই প্রকল্পটি পুনরায় চালু করার জন্য যাতে কেন্দ্রকে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় সেই অনুরোধও করা হয়েছে আবেদনে।
এদিকে, ভারতের বর্তমান পরিস্থিতির কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে এই সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সমাবেশকে দায়ী করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধির অনেকগুলি কারণের মধ্যে অন্যতম হল বড় বড় রাজনৈতিক জনসভা এবং ধর্মীয় জমায়েত।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০-র অক্টোবরে প্রথম ভারতে করোনাভাইরাসের বি.১.৬১৭ প্রজাতিটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। এরপর জিনগত চরিত্র বদলে বি.১.৬১৭ ভাইরাসের রূপ নেয়। যার সংক্রমণ ক্ষমতা অন্য প্রজাতিগুলির তুলনায় বেশি। এই স্ট্রেনকে গোটা বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝেই কেরল, তামিলনাড়ু, আসাম, পুদুচেরি ও বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। সেখানে দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে জমায়েত হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বড় বড় জনসভা করেছেন। বিরোধীদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা হয়েছে। রাজনৈতিক সমাবেশই নয়, কুম্ভমেলার মতো ‘সুপার স্প্রেডার’ ধর্মীয় সমাবেশ হয়েছে।