Advertisment

আইসিএমআরের দাবি সত্যি করে মার্চেই মিলবে করোনা মুক্তি, কী বলছে পরিসংখ্যান, জেনে নিন

কমেছে সংক্রমণ, যুদ্ধ জয়ের পথে দেশ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
India records 16,764 new Covid cases 31 December 2021

টিকাকরণ এবং টেস্টিং এই দুইয়ে ভর করে আজ সুস্থতার পথে দেশ । তার মাঝেই চিন্তা বাড়াচ্ছে ওমিক্রনের নয়া ভ্যরিয়েন্ট

প্রায় দুবছরের দুটি ঢেউ কাটিয়ে উঠে যখন আবার সব কিছু নিউ নর্মালের পথে হাঁটতে শুরু করেছিল সেই সময় বিশ্বজুড়ে ওমিক্রনের দাপটে নাজেহাল অবস্থা হয় বিশ্ববাসীর। ওমিক্রনের হাত ধরেই তৃতীয় ঢেউ ভারত সহ বিশ্বের একাধিক দেশে আছড়ে পড়ে।

Advertisment

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, কেবল ওমিক্রনের কারণেই সারা বিশ্বে প্রায় পাঁচ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ভারতের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা ইতিমধ্যেই প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ঢেউয়ের ওপর ভর করে ৫ লক্ষ ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। নভেম্বরের শেষের দিকে ভারতে প্রথম ওমিক্রনের দেখা মেলে। দিল্লিতে ডিসেম্বরে শুরুতে প্রথম ওমিক্রন কেস ধরা পড়ে।কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ভারতে লাফিয়ে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। ডেল্টার দাপটে ছারখার ভারত জুড়ে আশঙ্কার কালো মেঘ দানা বাঁধতে শুরু করে। আবার কী সেই একই মৃত্যু মিছিলের পথে হাঁটবে দেশ?

এই ভাবনা থেকেই দ্রুত আবারও বিভিন্ন রাজ্যে জারী হয় কোভিড বিধিনিষেধ। বন্ধ হয় স্কুল কলেজ অফিস। ওমিক্রন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করে। মূলত বিধিনিষেধ এবং টিকাকরণের ওপর ভর করেই এই সাফল্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৩,৪০৫ জন। সোমবার এই সংখ্যা ১৬ হাজারের বেশি। একদিনে মৃত্যু হয়েছে ২৩৫ জনের, যা গতকালের চেয়ে সামান্য বেশি।

পজিটিভিটি রেট অবশ্য কমল বেশ খানিকটা। এই মুহূর্তে তা ১.২৪ শতাংশ। যদি আমরা একমাসের আগের ডেটা দেখি তাহলে আমরা দেখতে পাব ঠিক একমাস আগে ভারতে এই দিনে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লক্ষ ছাড়িয়েছিল। যার মধ্যে ৯হাজার ৬৯২টি ওমিক্রনের উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল। সংক্রমণ হার ছিল ১৭.৯৪ শতাংশ।

এখন ধীরে ধীরে ওমিক্রন-ডেল্টার দাপট কম হতেই জীবন স্বাভাবিক হয়ে আসছে, কোভিড-১৯ মহামারি সম্পর্কে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আমাদের কী শিখিয়েছে?

ভাইরাসটি খুবই সক্রিয় ছিল। সংক্রমণ ক্ষমতা ডেল্টার তুলনায় তিন থেকে চারগুন বেশি থাকলেও, ওমিক্রনে গুরুতর অসুস্থতা সেভাবে চোখে পড়েনি। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু হার কপালে ভাঁজ ফেলেছে, তা সত্ত্বেও ডেল্টার তুলনায় অনেক মৃদু প্রভাব ওমিক্রনের ক্ষেত্রে লক্ষ করা গেছে। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞরাই মনে করছেন ওমিক্রনের প্রভাব মানব জীবনে মৃদু তার অন্যতম কারণ হল টিকাকরণ। বিধিনিষেধ এবং টিকাকরণ এই দুইকে অবলম্বন করেই আজ যুদ্ধ জয়ের পথে দেশ।

তবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যেই সাবধান করে জানিয়েছে এটাই করোনা ছড়িয়ে পড়ার আদর্শ সময়। কিন্তু কেন? সেই ব্যাখ্যায় সংস্থা জানিয়েছে একাধিক দেশে কোভিড বিধি উঠে গেছে, নিউ নর্মালের পথে হাঁটতে শুরু করেছে দেশ। সেক্ষেত্রে অনেক সময় মানা হচ্ছে না কোভিড বিধি। একই সঙ্গে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে ওমিক্রনের নতুন রূপ আরও ভয়াবহ হতে পারে। যদিও ভারতের ক্ষেত্রে গবেষণায় উঠে এসেছে বিএ.২ ভ্যারিয়েন্ট ভারতে সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি।

সুরক্ষা এখন আরও শক্তিশালী

উচ্চ টিকাহার এবং করোনা চিকিৎসায় আধুকিকরণের ফলে আজ আমরা অনেক বেশি সুরক্ষিত। ডেল্টার দাপটের সময় থেকেই মানুষের মধ্যে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। টিকাকরণ এবং বুস্টার ডোজের ওপর ভর করে সেই সুরক্ষা এখন আরও বেশি জোরদার হয়েছে।

সেই সঙ্গে পরিসংখ্যান অনুসারে ভারতে এখনও প্রায় ১৭৬ কোটি করোনা টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে পরীক্ষার সংখ্যাও আগের থেকে বেড়েছে কয়েকগুণ। ভারতে সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৬ কোটি মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। ২০২১ সালে যখন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আঘাত হেনেছিল তখন এই হারে টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি।

লিওনার্দো মার্টিনেজ, বোস্টন ইউনিভার্সিটির একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞগত জানুয়ারিতে জানিয়েছেন ওমিক্রন যত দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে ততই মিউটেটেড হয়ে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তবে দাপট শেষ হলেও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এখনও বেশ কিছুদিন কোভিড বিধি মেনে চলার এবং মাস্ক পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভারতের ক্ষেত্রে আইসিএমআরের দাবি সত্যি করে মার্চ থেকেই আবার নিউ নর্মালের পথে হাঁটতে চলেছে শেষ। 

ICMR
Advertisment