ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ডঃ কে শিবনের জীবনকাহিনী অনেকেই অবাক করেছে। ইসরোর এই প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে. শিবন বিজ্ঞানী নয়, স্কুল শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন। স্নাতকোত্তরের পর, যখন তিনি ISRO-এর স্যাটেলাইট সেন্টারে চাকরির জন্য গিয়েছিলেন তখন তাকে সেখান থেকে অপমান করে কার্যত তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৩ অক্টোবর গোয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এনআইটি) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কে. শিবন তাঁর জীবনের এমন অনেক অজানা ঘটনা সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
তিনি বলেন, 'বি.ই- করার পর চাকরি না পেয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে হই। স্নাতকোত্তর শেষের পর ইসরোর স্যাটেলাইট সেন্টারে যাই একটা চাকরির খোঁজে'। ইসরো-র স্যাটেলাইট সেন্টার থেকে তাঁকে সেদিন বলা হয় আপনি কাজের নয়, এখান থেকে চলে যান। পরে একটা সময় সেই একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হয়েই সকলে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। শিবন জানিয়েছেন, “আমি স্যাটেলাইট সেন্টারে চাকরি পাইনি ঠিকই, কিন্তু রকেট সেন্টারে চাকরি পেয়ে নিজেকে বারে বারে প্রমাণ করে গিয়েছি"।
প্রাক্তন ইসরো প্রধান কে. শিবন বলেছেন, 'আমি আমার ক্যারিয়ারে যা চেয়েছিলাম তা আমি কখনও পাইনি। ভাগ্য সবসময় পরিহাস করলেও বিকল্প পথ খোলা রাখে। তিনি বলেন, 'আমি বি.ই করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাবা বলেছিলেন যে তাঁর কাছে পড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত টাকা নেই এবং আমাকে B.Sc এ ভর্তি করিয়েছিলেন তিনি। বিএসসি করার পর আমি এমএসসি করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেবারও বাবার আপত্তি ছিল। তিনি বলেন, বিই কর'।
শিবন আরও বলেছেন 'আমি যখন জিএসএলভি (জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল) এর ডিরেক্টর হয়েছিলাম, তখন আমি এই প্রকল্পটিকে সম্পূর্ণ সফল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম। তিনি বলেছেন যে জিএসএলভি প্রকল্প বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল। ISRO আমাকে এমন একটি প্রকল্পের ডিরেক্টর করেছে যা ৪ বার ব্যর্থ হয়েছিল। তিনি জানান, “আমি যখন জিএসএলভি প্রকল্পের ডিরেক্টর হলাম, তখন আমার সমস্ত বন্ধু এবং সহকর্মীরা আমাকে অভিনন্দন জানানোর পরিবর্তে আমার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছিল"।
কে. শিবনের নেতৃত্বে ভারত চন্দ্রযান-২ মিশন চালু করে। যা সফল হয়নি। সেই সময় শিবনের শিশুর মত কেঁদে ফেলার ছবি ভাইরাল হয়েছিল। সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে শিভান বলেছেন যে চন্দ্রযান-২-এর ব্যর্থতার পরও আমরা চুপ করে বসে থাকিনি এবং পরের দিনই চন্দ্রযান-৩-এর প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। প্রাক্তন ISRO চেয়ারম্যান শিবন বলেছেন যে 'চন্দ্রযান-৩ প্রকল্পের জন্য খুব শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে। আমরা চন্দ্রযান-২ এর ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং চাঁদে পৌঁছানোর সাফল্য অর্জন করেছি'।