মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন 'ব্রিটিশ-বিরোধী' নন। এমনটাই দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে তাঁর রক্তের সম্পর্ক। কারণ, তাঁর শিকড় রয়েছে আয়ারল্যান্ডে। তারপরও তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডে শান্তি প্রক্রিয়া স্থাপন থেকে পিছপা হতে নারাজ। বাইডেন নিজে তাঁর আইরিশ ঐতিহ্যের জন্য গর্বিত। মঙ্গলবার তিনি দেরিতেই বেলফাস্টে পৌঁছন।
সফরসূচি অনুযায়ী দক্ষিণে আইরিশ প্রজাতন্ত্রে তাঁর আড়াই দিন কাটানোর কথা। তার আগে ব্রিটেনে আধবেলা কাটান বাইডেন। আয়ারল্যান্ডে পৌঁছে তিনি বৈঠক করেন স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিক ও আত্মীয়দের সঙ্গে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডে এমন একটা সময়ে এলেন, যখন উত্তর আয়ারল্যান্ড শান্তিচুক্তির ২৫তম বার্ষিকী পালন করছে। কিন্তু, যে ক্ষমতা ভাগাভাগির সরকারের সঙ্গে এই চুক্তি, তা এখন পতনের মুখে।
স্বভাবতই কেন এই পরিস্থিতিতে বাইডেনের আয়ারল্যান্ড সফর, তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এই প্রসঙ্গে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষে ইউরোপের দায়িত্বপ্রাপ্ত শীর্ষ অধিকর্তা আমান্ডা স্লোট বেলফাস্টে সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রেসিডেন্টের ট্র্যাক রেকর্ড দেখায় যে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী নন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন অবশ্যই একজন গর্বিত আইরিশ আমেরিকান। তিনি তাঁর আইরিশ শিকড়ের জন্যও গর্বিত। তবে তিনি ব্রিটেনের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বেরও প্রবল সমর্থক।'
স্লোট উত্তর আয়ারল্যান্ডের বৃহত্তম ব্রিটিশপন্থী দল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি (ডিইউপি)-এর একজন জনপ্রতিনিধি স্যামি উইলসনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিলেন। স্যামি বুধবার এক সংবাদপত্রকে বলেছিলেন যে বাইডেন 'ব্রিটিশ-বিরোধী'। প্রাক্তন ডিইউপি নেতা এবং প্রাক্তন উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রথম মন্ত্রী আর্লেন ফস্টার মঙ্গলবার জিবি নিউজ চ্যানেলকে বলেছিলেন যে বাইডেন যে 'ব্রিটেনকে ঘৃণা করেন', তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন- দেশে একদিনে করোনায় সংক্রমিত ৭,৮৩০, ফের কোভিশিল্ড বানানো শুরু করল সিরাম
এই সব বক্তব্য যাতে ব্রিটেন এবং আমেরিকার মধ্যে সম্পর্কে কোনও প্রভাব না-ফেলে, সেই জন্য তড়িঘড়ি মুখ খুলতে বাধ্য হন হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধি। ব্রেক্সিটের পর ব্যবসায়িক আইনগুলো ব্রিটেনের অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে আয়ারল্যান্ডে অন্যভাবে লাগু হয়েছে। তার জেরে একবছর ধরে সেখানকার বর্তমান সরকারকে বয়কট করছেন বিরোধীরা। আর, সেটাই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকেই।