সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আগুনে জ্বলছে নূহ ও আশপাশের এলাকা। হিংসা ছড়িয়েছে গুরুগ্রামেও। সতর্ক দিল্লিও। পুলিশ জানিয়েছে, ‘মাঝরাতে গুরুগ্রামের একটি মসজিদেও হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা’। হামলায় একজন নিহত ও অনেকে আহত হন। ৫৭ নম্বর সেক্টরের আঞ্জুমান জামা মসজিদেও আগুন দেওয়া হয়। এদিকে হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গে গুরুগ্রামের সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিং বলেছেন, ‘নুহ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দুর্ভাগ্যজনক, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে’। সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন ধর্মীয় যাত্রায় অস্ত্র কোথা থেলে এল?
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং গুরুগ্রামের সাংসদ রাও ইন্দ্রজিৎ সিং নিশ্চিত করেছেন যে গুরুগ্রামের একটি মসজিদে হামলা হয়েছে। যাতে ইমাম সহ দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। তিনি বলেন, সোমবার হরিয়ানার নুহ জেলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার যে ঘটনা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক, তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে সহযোগিতার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি বলেন, "স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক শান্তি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় আধাসামরিক বাহিনী জেলায় মোতায়েন করার জন্য রাজ্য সরকারকে আশ্বাস দিয়েছে।" তিনি আরও জানিয়েছেন, “হরিয়ানা সরকার নুহ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এক সপ্তাহের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের ২০ টি কোম্পানি চেয়ে পাঠিয়েছে’।
অন্যদিকে, হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ বলেছেন যে নুহ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। হিংসার ঘটনায় পুলিশ প্রায় ২০টি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে এবং বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর এবং অন্যান্য নেতারা রাজ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সাধারণের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
গুরুগ্রামের সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিং বলেন, দেশ বিভাগের পর গত ৭৫ বছরে" এমন ঘটনা ঘটেনু। “এখন কেন এমন হল? আমি বিশ্বাস করি এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া দায়ি।”কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যোগ করেছেন যে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। মানুষের মধ্যে "নেতিবাচক চিন্তা"র সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, “আমি পুলিশকে তদন্ত করতে বলেছি, কে বা কারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের ভিডিও আপলোড করেছে তার তদন্ত হওয়া দরকার। এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ভিডিও আপলোড করা হলে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”
অন্যদিকে ফরিদাবাদের সাংসদ এবং রাজ্যের মন্ত্রী কৃষাণ পাল গুর্জার বলেছেন, “এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। কিছু লোক গত সাড়ে আট বছর ধরে (বিজেপি শাসনে) হরিয়ানায় ভ্রাতৃত্ব, শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে।”
নূহ সহিংসতা নিয়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনকে আক্রমণ করলেন বিজেপির মন্ত্রী, তিনি বলেন-ধর্মীয় যাত্রায় অস্ত্র নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়। বিপুল জনসমাগম নিয়ে যাত্রা বের হওয়া সত্ত্বেও পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় উঠেছে প্রশ্ন। এদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং গুরুগ্রামের সাংসদ রাও ইন্দ্রজিৎ সিংও এই হিংসার হিন্দু সংগঠনগুলিকে আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, ধর্মীয় পদ যাত্রা চলালাকীন কেউ যদি তরবারি-লাঠি নিয়ে যাত্রা করেন, তবে তা ঠিক নয়।
রাও ইন্দ্রজিৎ সিং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, 'এই যাত্রায় তাদের হাতে অস্ত্র কে দিয়েছে? ধর্মীয় যাত্রায় সময় কেউ কি তলোয়ার বহন করে? লাঠি বহন করে? সেই সঙ্গে উস্কানির তত্ত্বও খাড়া করেছেন তিনি।