চিনে ক্রমশ কমছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। তবে এই খবরে সন্তোষ প্রকাশ করেও বৃহস্পতিবার বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization বা WHO), কারণ চিনের বাইরে এখনও ছড়াতে পারে সংক্রমণ। WHO-এর ডিরেক্টর জেনারেল তেদ্রোস আধানম ঘেবরেইয়েসুস সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় এক বৈঠকে বলেন, "রোগের প্রকোপ হ্রাস পাচ্ছে, এতে আমরা উৎসাহিত, তবে এটা আত্মপ্রসাদের সময় নয়।"
Advertisment
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২৫টি দেশ থেকে ১,০৭৬ জন রোগীর খবর পাওয়া গিয়েছে। সর্বশেষ খবর এসেছে ইরান থেকে পাঁচজনের সংক্রমণের। তেদ্রোস আরও বলেন যে চিনের ৭৫ হাজার রোগীর তুলনায় এই সংখ্যা কম মনে হলেও "এই পরিস্থিতি খুব বেশিদিন নাও থাকতে পারে"।
অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর দেগুর মেয়র শহরবাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন তাঁরা যথাসম্ভব বাড়ি থেকে না বেরোন। এর কারণ, শহরের একটি গির্জার অনুগামীদের মধ্যে আচমকাই বৃদ্ধি পেয়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। তবে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, নতুন সংক্রমণ ছড়িয়েছে "বিভিন্ন এলাকার সমষ্টিতে", জানিয়েছেন WHO-এর জরুরি অবস্থা তথা আশঙ্কা মূল্যায়ন শাখার ডিরেক্টর, অলিভার মর্গান।
Advertisment
মর্গান বলেন, "(দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণ) সংখ্যা হিসেবে যথেষ্ট বেশি মনে হলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইতিমধ্যে বর্তমান প্রাদুর্ভাবের সঙ্গেই সেগুলি যুক্ত। তেদ্রোস যোগ করেন যে এখন পর্যন্ত ১০৪ জন রোগীর খবর নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ কোরিয়া, যাঁদের মধ্যে ২২ জনের খবর পাওয়া গিয়েছে বৃহস্পতিবার। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিতে সক্ষম দক্ষিণ কোরিয়া।
এছাড়াও তেদ্রোস জানান, বিশ্বের ১২টি মাস্ক, গগলস, এবং মেডিক্যাল গাউন প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে এই সরঞ্জামগুলি সর্বাগ্রে পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁর আলোচনার ফল "ইতিবাচক" বলে জানিয়েছেন তেদ্রোস।
ওদিকে রাষ্ট্রসংঘে চিনের রাষ্ট্রদূত চেন শু জেনিভায় একটি পৃথক সাংবাদিক বৈঠকে জানান যে তিনিও চিকিৎসা-সংক্রান্ত সরঞ্জামের অভাব নিয়ে তেদ্রোসের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। "আমাদের অবশ্যই চাই মাস্ক এবং অন্যান্য রোগ প্রতিরোধকারী সরঞ্জাম, সঙ্গে রেস্পিরেটরি মেশিন," বলেন তিনি।
চেন আরও জানান যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে চিনে সফররত, যদিও দলটি করোনাভাইরাস মহামারীর কেন্দ্রবিন্দু উহান শহর পরিদর্শন করবে কিনা, তা "বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে"। তাঁর কথায়, "উহান বাদ দিয়ে অন্যান্য জায়গায় গেলেও বিশেষজ্ঞরা সঠিক তথ্য পাবেন না। তবে উহান যাওয়াটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে, যেহেতু ভাইরাস এতটা ছড়িয়েছে, এবং যেহেতু সেখান থেকে ফেরার পর কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। আমার মনে হয় আগামী কয়েকদিনে ছবিটা আরও পরিষ্কার হবে।"
আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা!
একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন