পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি শনিবার পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি দেশের সাধারণ নির্বাচনে যদি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হতো, তাহলে নির্বাচনের ফল আরও তাড়াতাড়ি সামনে আসত। দেশকে এই সংকটে পড়তে হতো না।
তিনি বলেন, "কমিশনের কাছে দীর্ঘ দাবি সত্ত্বেও, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) নতুন নির্বাচন পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর প্রায় ৭২ ঘন্টা কেটে গেলেও কমিশন এখনও প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ একটি পোস্টে রাষ্ট্রপতি আলভি বলেছেন, "আজ যদি ইভিএম-এর ব্যবহার করা হতো, তাহলে পাকিস্তান এই সংকট থেকে রক্ষা পেত।" রাষ্ট্রপতি আলভি পূর্ববর্তী পিটিআই নেতৃত্বাধীন সরকারের ইভিএমের জন্য লড়াইয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন।
পাকিস্তানের নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের মধ্যে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) রবিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। উল্লেখ্য পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০০টি আসন নিয়ে এগিয়ে রয়েছে। দলের কোর কমিটির বৈঠকে সারাদেশে 'শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ' কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারি ভোট হয়েছে এবং তিন দিন পর নির্বাচনের ফলাফল এখনও ঘোষণা করা হয়নি । ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্ররা এগিয়ে থাকলেও নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন সর্বোচ্চ ভোটের সংখ্যা নিয়ে একক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ফলাফল সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেনি। তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের মধ্যে প্রায় ৫২ টি ভোটকেন্দ্রে ১৫ ফেব্রুয়ারি পুনরায় ভোটগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
পাকিস্তান সরকার ভোটের দিন সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ৮ ফেব্রুয়ারি মোবাইল ফোন পরিষেবা স্থগিত করেছিল। এদিকে, ইমরান খানের দল পিটিআইও অভিযোগ করেছে যে "কারচুপি" ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব ঘটাচ্ছে। পিটিআই নেতা গোহর খান নির্বাচন কমিশনকে অভিযুক্ত করেছেন "পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সংখ্যাগরিষ্ঠকে সংখ্যালঘুতে রূপান্তর করার মূল লক্ষ্য নিয়ে ফলাফল বিলম্বিত করে ইচ্ছাকৃতভাবে জয়ী আসনগুলি পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।"
তিনি যোগ করেন, "নির্বাচন কমিশন স্বচ্ছ নির্বাচন পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আইন অনুযায়ী সব ফলাফল দুপুর ২টোর মধ্যে ঘোষণা করতে হবে, অন্যথায় নির্বাচন কর্মকর্তারা ফলাফল বিলম্বের কারণ জানাতে আইনত বাধ্য থাকবেন" । পাক সংবাদপত্র ডনের রিপোর্ট অনুসারে ২৬৪ আসনের মধ্যে ২৫৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে ইমরান খানের পিটিআই-এর সমর্থনে ৯৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন। নওয়াজ শরীফের পিএমএল (এন) ৭৩টি আসন জিতেছে এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি ৫৪টি আসন পেয়েছে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির শরিফের জোট সরকারের আহ্বানকে সমর্থন করেছেন। খবরে বলা হয়েছে, শরিফ জোট গঠনের জন্য পিপিপির সঙ্গে আলোচনা করছেন।