Advertisment

‘ঘৃণাত্মক বক্তৃতা’ বন্ধে ‘টেলিভিশন অ্যাঙ্করদের’ ভূমিকা স্মরণ করাল শীর্ষ আদালত

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, প্রিন্ট মিডিয়ার মতো নিউজ চ্যানেলের জন্য কোন প্রেস কাউন্সিল নেই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Supreme Court, hate speeches, SC on hate speeches, SC on TV channel debate, TV debates hate speeches, hate speeches India, hate speeches supreme court, hate speeches BJP, India news, Indian Express

ঘৃণাত্মক বক্তব্য সমাজের জন্য একটি "বড় ক্ষতির সমান"! বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ে আবারও কড়া মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেছে, 'ঘৃণামূলক বক্তব্য সমাজের কাছে 'হুমকির' মত'। ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত উল্লেখ করেছে, টিভি সংবাদ উপস্থাপক যদি বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের অংশ হয়ে থাকেন তাহলে কেন তাকে বহিষ্কার করা যাবে না অথবা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?  

Advertisment

সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, 'প্রিন্ট মিডিয়ার মতো নিউজ চ্যানেলের জন্য কোন প্রেস কাউন্সিল নেই'। আদালত বলেছে, "আমরা বাকস্বাধীনতার পক্ষে কিন্তু, ঘৃণাত্মক বক্তব্য সমাজের জন্য একটি "বড় হুমকি"!  কী মূল্যে আমাদের সেই বাক স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকবে তার ওপর আমাদের আলোকপাত করতে হবে।" আদালত, টিভি সংবাদের বিষয় বস্তুর উপর নিয়ন্ত্রণের অভাবের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে তারা দেশে একটি মুক্ত ও ভারসাম্যপূর্ণ সংবাদ মাধ্যম চায়।

গত কয়েক মাসে সুপ্রিম কোর্ট বেশ কয়েকবার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে। গত বছরের অক্টোবরে, সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র যারা ঘৃণাত্মক বক্তৃতা দিচ্ছেন তাদের সতর্ক করেনি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য রাজ্যগুলির প্রতি অসন্তোষও প্রকাশ করেছে।

আদালত বলেছে, 'ঘৃণাত্মক বক্তব্য একটি সম্পূর্ণ হুমকি হয়ে উঠেছে এবং এটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে'। একই সঙ্গে আদালত মিডিয়া ট্রায়ালের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এই প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক বিমানে সহযাত্রীর গায়ে প্রস্রাবের বিষয়ে তার মতামত ব্যক্ত করে আদালত বলেছে  “এ মামলায়  অভিযুক্তকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। মিডিয়ার বোঝা উচিত যে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, তার মানহানি করা উচিত নয়। প্রত্যেক মানুষেরই মর্যাদা আছে”।

বিচারপতি জোসেফ বলেন, 'মিডিয়া সবকিছুতেই চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি করে সংবাদপত্রের বিপরীতে, ভিজ্যুয়াল মাধ্যম আপনাকে অনেক বেশি প্রভাবিত করতে পারে এবং শ্রোতারা এই ধরনের সংবাদ সামগ্রী দেখার জন্য যথেষ্ট পরিণত নয়'। আদালত উল্লেখ করেছে যে অ্যাঙ্কররা কখনও কখনও লাইভ বিতর্কের সময় ঘৃণাত্মক বক্তব্যের অংশ হয়ে ওঠেন। কারণ তারা হয় প্যানেলে বসে থাকা কোনও ব্যক্তির কণ্ঠস্বরকে রোধ করেন, অথবা তাদের পক্ষ উপস্থাপন করার অনুমতি দেন না।

বিচারপতি নাগারত্না বলেছেন ‘টিভি চ্যানেলগুলি যদি ঘৃণাত্মক বক্তব্যে লিপ্ত হয় এবং ‘প্রোগ্রাম কোড লঙ্ঘন’ করে দোষী প্রমাণিত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে’। সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠেছে ‘কবে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের জড়িত চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

শুক্রবারই, সুপ্রিম কোর্ট একটি ঘৃণামূলক বক্তব্যের মামলায় দিল্লি পুলিশকে তুলোধোনা করে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছে এফআইআর নথিভুক্ত করতে দিল্লি পুলিশের ৫ মাস লেগেছে। এফআইআর দায়ের করতে কেন ৫ মাস লাগলো তা জানতে চেয়েছে আদালত।  সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড় দিল্লি পুলিশের কাছে জানতে চান, মামলায় এখনও পর্যন্ত তদন্তে কী উঠে এসেছে? এবং কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?

সুপ্রিম কোর্ট গত বছর একটি মন্তব্যে সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল মিডিয়ায় 'ঘৃণাত্মক' বক্তব্যের জন্য সরকার কেন ‘নীরব দর্শকের' ভূমিকা পালন করছে? সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা আবেদনগুলিতে, ধর্ম সংসদের সভায় দেওয়া বক্তৃতা ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক বার্তা ছড়ানোর বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। এই আবেদনের শুনানি করার সময় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে টিভিতে অশ্লীল ভাষা রোধ করা অ্যাঙ্করদের কাজ এবং তাদের শো’তে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার না করা অ্যাঙ্করদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

আদালত বলেছিল যে মূলধারার ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়বস্তু মূলত অনিয়ন্ত্রিত। আদালত বিস্ময় প্রকাশ করেছিল যে কেন্দ্রীয় সরকার ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য ‘নীরব দর্শকের’ ভূমিকা পালন করেছে। শুধু সুপ্রিম কোর্টই নয়, গত বছরের অক্টোবরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ভারত সফরের সময় ঘৃণামূলক বক্তব্যের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।

Hate Speech supreme court
Advertisment