মঙ্গলবার সন্ধেয় দিল্লিতে এসে পৌঁছেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন আবদুলআজিজ আল সৌদ। এটি তাঁর প্রথম ভারত সফর। যুবরাজের সঙ্গে এসেছেন উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল এবং বাণিজ্য প্রতিনিধিরাও।
গত বছর নভেম্বরে বুয়েনস আয়ার্সে জি ২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন পৃথকভাবে সাক্ষাৎ হয়েছিল যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসেও মোদীর সৌদি আরব সফরের সময়ে আবদুলআজিজের সঙ্গে দেখা হয় দুজনের।
এবারে দু পক্ষের মধ্যে পাঁচটি ক্ষেত্রে মৌ/চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। এর মধ্যে রয়েছে বিনিয়োগ, পর্যটন, গৃহনির্মাণ এবং তথ্য ও সম্প্রচার।
সৌদি আরবে বসবাস করছেন প্রায় ২৭ লক্ষ ভারতীয়। সে দেশে বসবাসকারী ভিন দেশের নাগরিকদের মধ্যে এই সংখ্যাই সর্বোচ্চ। এঁরা ভারতে বছরে ১১ বিলিয়ন পাউন্ড মার্কিন ডলার পাঠিয়ে থাকেন এ ছাড়া প্রতি বছর ১ লক্ষ ৭৫ হাজারেরও বেশি হজ যাত্রী ভারত থেকে সৌদি আরবে যান। এসব কারণে সৌদি আরব ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ।
আরও পড়ুন, চিন কেন আজহার মাসুদকে বাঁচাচ্ছে?
কৌশলগত সম্পর্ক
২০১০ সালের রিয়াধ ঘোষণা ভারত ও সৌদি আরবকে কৌশলগত সম্পর্কে আবদ্ধ করেছে। এই দুই দেশের সম্পর্কের বহু পুরোন ইতিহাস রয়েছে। এই সম্পর্কের ফলে লাভবান হয় দুই দেশই। দু পক্ষের মধ্যে মন্ত্রী কৌশলগত অংশীদারি পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
নিরাপত্তা
২০১৬ সালে নরেন্দ্র মোদীর সৌদি সফরের সময়ে একটি মৌ স্বাক্ষরিত হয়। তাতে আর্থিক দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানোর অপরাধের ব্যাপারে দু দেশের গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদানের কথা ছিল।
নয়া দিল্লির বক্তব্য, রিয়াধ ভারতের সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত আশঙ্কার ব্যাপারে যথেষ্ট ইতিবাচক। বিশ্বজোড়া সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভারতের সঙ্গে এক যোগে কাজ করার ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে সৌদি।
প্রতিরক্ষায় সহায়তা
ভারত-সৌদি সম্পর্কে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ২০১৪ সালে দু দেশের মধ্যে মৌ স্বাক্ষরিত হয়। সে সময়ে ভারত সফরে এসেছিলেন তৎকালীন যুবরাজ সলমন, তিনিই এখন বর্তমান রাজা। যোথ নৌমহড়ার ব্যাপারে দুদেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাণিজ্য ও শক্তি
গত ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে দু দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ২৭.৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৬-১৭র তুলনায় এই পরিমাণ ১০ শতাংশ বেশি। এর ফলে ভারত এখন সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্যরত দেশ গুলির মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
সৌদি আরব ভারতের শক্তি ক্ষেত্রে অন্যতম ভরসা। অপরিশোধিত তেলের ক্ষেত্রে ভারতের চাহিদার ১৭ শতাংশ এবং এলপিজি-র ৩২ শতাংশের উৎস সৌদি আরব। সম্প্রতি সৌদি আরামকো, সৌদি আরবের অ্যাডনকের সঙ্গে রত্নগিরি রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রো কেমিক্যাল প্রজেক্ট লিমিটেডের অংশীদার হতে রাজি হয়েছে।
অন্যান্য ক্ষেত্র
এছাড়াও সার, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিকাঠামো এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রেও যৌথ উদ্যোগের কথা ভাবা শুরু হয়েছে। স্মার্ট সিটি, লোহিত সাগর পর্যটন প্রকল্প এবং এন্টারটেনমেন্ট সিটির মত ক্ষেত্রেও দু দেশ একযোগে কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
Read the Full Story in English