কাতার আদালতের রায়ে অথৈ জলে পড়েছেন বিশাখাপত্তনমের প্রাক্তন নৌবাহিনী অফিসার পি সুগুনাকরের পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবারই কাতারের এক আদালত পি সুগুনাকর এবং সাত প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা কর্মীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। তা দেখে তাঁরা হতবাক বলেই জানিয়েছেন সুগুনাকরের পরিবারের সদস্যরা। এই ব্যাপারে সুগুনাকরের শ্যালক কে কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, 'আমরা খুব কষ্টের মধ্যেই কাটাচ্ছিলাম। এই খবর পেয়ে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি।'
সুগুনাকরের স্ত্রী বৈজয়ন্তী এবং তাঁর ছেলে ও মেয়ে গোটা ঘটনায় হতবাক। তাঁরা রীতিমতো আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। তাঁরা এখনও বুঝতে পারছেন না, যে কী করতে হবে। আট প্রাক্তন নৌ-কর্তা দোহার দাহরা গ্লোবাল সংস্থায় কাজ করত। গত বছর দাহরা গ্লোবাল সংস্থার ওই আট কর্মচারীকে হেফাজতে নিয়েছিল কাতার পুলিশ। তবে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রকাশ্যে আসেনি। কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, 'পরিবারটি কাতারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেছে। সঙ্গে অনুরোধ করেছে যাতে সুগুনাকর এবং অন্যদের নিরাপদে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।'
তাঁর গ্রেফতারের আগে, সুগুনাকর তাঁর পরিবারকে প্রতিদিন ফোন কল করতেন। কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, 'হঠাৎ করেই, আমরা জানতে পারলাম যে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০২২ সালের জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫ মাস, তাঁর সঙ্গে আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তান কার্যত এখন নরকের মত জীবন কাটাচ্ছে। তাঁরা জানে না, ওঁনার এখন কী হবে!' আমরা কী ঘটেছে, তা জানতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি।
নৌবাহিনীর অপর প্রাক্তন অফিসার এবং সুগুনাকরের বন্ধু বলেছেন যে তিনি বিশাখাপত্তনমের প্রতিরক্ষা কর্মীদের মধ্যে 'পরিচিত এবং সম্মানীয় ব্যক্তি'। সুগুনাকর, 'আইএনএস তরঙ্গিনী পাল জাহাজে দু'বার বিষুবরেখা অতিক্রম করেছেন।' শিক্ষকের ছেলে, সুগুনাকর ১৮ বছর বয়সের পরেই নৌবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি নেভাল ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পসে কাজ করেন বলেই তাঁর পরিবার জানিয়েছে। তিনি নেভাল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে বিটেক (মেকানিক্যাল) পাস করেন। এরপর ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস কলেজ থেকে প্রতিরক্ষা এবং কৌশলগত স্টাডিজে এমএসসি করেন।
আরও পড়ুন- ‘নগদ কোথায়, প্রমাণ করুন’, চোখা চোখা প্রশ্নে চাচাছোঁলা উত্তর মহুয়ার
তিনি ২০১৩ সালের নভেম্বরে অবসর গ্রহণ করেন এবং দোহার আল দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিসে যোগদানের আগে কয়েক মাস হিন্দুস্তান শিপইয়ার্ড লিমিটেডে কাজ করেন। তাঁকে বাড়িতে আনার জন্য পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার বিশাখাপত্তনমে বিজেপি সাংসদ জিভিএল নরসিমহা রাওয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এই ব্যাপারে সাংসদ নরসিমহা রাও বলেন, 'আমি ওই নৌ অফিসারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছি এবং আপডেট দিচ্ছি। আমি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং কাতারের ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও কথা বলেছি। ভারত সরকার ওই পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।'