টানটান উত্তেজনা, তামাম ভারতবাসীর নজরে এখন উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ। গত ১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধারকাজ প্রায় শেষের মুখে। যে কোনও মুহূর্তে বাইরে আসতে পারেন আটক শ্রমিকরা। এদিকে সুড়ঙ্গের সামান্য দূরেই গত কয়েকদিন ধরে প্রিয়জনেরদের খোঁজে ঠায় দাঁড়িয়ে শ্রমিকদের পরিজনেরা। যেন আর তাঁদের তর সইছে না। আশার আলো থাকলেও আজও তাঁদের চোখে-মুখে গভীর উৎকণ্ঠা। একবার প্রিয়জনদের মুখ দেখার অপেক্ষা, তারপর মঙ্গলবারই যেন এতদিন আশঙ্কার দোলাচলে থাকা মানুষগুলোর কাছে দীপাবলির রোসনাই।
ঝারখণ্ডের বাসিন্দা আদিত্য নায়েক। তাঁর ছোট ভাই গুণধর নায়েক (২৮) এবং খুড়তুতো ভাই রবীন্দ্র নায়েক (৩২) গত প্রায় তিনসপ্তাহ ধরে সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে রয়েছেন। ওঁদের হাত ধরেই সুড়ঙ্গে ঢুকে কাজ করতে এসেছিলেন আদিত্যও। কিন্তু বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছেন। আটকদের খোঁজে সেই থেকেই সুড়ঙ্গ বাইরে খোলা আকাশই এখন আদিত্যের ঠিকানা। উদ্ধারকাজে মিলেছে সাফল্য।আশার আলো দেখছেন আদিত্যও। জানিয়েছেন, তিনি খুব খুশি, স্বস্তিও পেয়েছেন। তবে আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে বাইরে আনা পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করবেন, তার আগে কোনওভাবেই বাবা-মা'কে ফোন করে উদ্ধারকাজের সাফল্যের কথা জানাবেন না।
আদিত্য বলেন, 'যতবার আমার বাবা-মা ফোন করছেন, ততবারই কাঁদছেন। বেশ কয়েকবার, আমি ওঁদের বলেছিলাম উদ্ধারকারীরা পরে দিনই সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করে আনবেন আটক শ্রমিকদের। কিন্তু ততবারই বাধা এসেছে, ফলে ওঁদের বলাটা ভুল হয়েছে। আমি আর ওঁদের মিথ্যা আশ্বাস দিতে চাই না।'
উদ্ধারকারকাজে সাফল্যের খবর জেনেই চাঙ্গা আদিত্য নায়েক। বাসায় গিয়েই গুছিয়ে নিয়েছেন ভাইদের ব্যাগ। আদিত্যর কথায়, 'আমাদের ব্যাগ গুছোনো আছে। ওদের বাইরে এনে প্রথমে হাসপাতালে যাবে। চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিলেই ওদের নিয়ে বাড়িতে ফিরবো। আমরা দীপাবলি উদয়াপন করতে পারিনি। কিন্তু ভাইয়েরা বাড়ি ফেরা মাত্রই আমাদের দীপাবলি শুরু হবে।'
আরও পড়ুন- উত্তরকাশীর অন্ধকার সুড়ঙ্গে আশার আলো, যে কোনও মুহূর্তে বাইরে আসতে পারেন আটক শ্রমিকরা