ইউক্রেন থেকে ফিরতে হয়েছে। আসলে বলা ভাল, পালাতে হয়েছে। কিন্তু, যুদ্ধ শেষ হলেই ফের ইউক্রেনে ফিরতে চান ভারতীয় পড়ুয়ারা। অনেক চিন্তা মাথায় নিয়ে তাঁরা ইউক্রেন থেকে ফিরে এসেছেন। রোমানিয়া এবং হাঙ্গেরি থেকে বিমান শনিবারই ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরানো শুরু করেছে।
এখনও অনেকে আটকে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে। পালানোর পথ পর্যন্ত নেই। চারপাশে এমনভাবেই ঘিরে আছে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। যখন-তখন সাইরেন বাজছে। আর, আছড়ে পড়ছে ক্ষেপণাস্ত্র থেকে গোলাবারুদ। রাস্তাঘাট শুনশান। গাড়ি চলাচলের জো নেই। বম্বিং শেল্টার থেকে হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছনোও তাই বেজায় কঠিন হয়ে উঠেছে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের কাছে।
শুধু তাই না। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো পড়ুয়ারা খাবার জল এবং খাবারও পাচ্ছেন না। তার ওপর পালানোর পথটা দিনকে দিন কঠিন হয়ে উঠছে। কারণে, ইউক্রেন প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মিলিশিয়া তৈরি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে দিয়েছে।
রুশ প্রশাসন প্রথমে মনে করেছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে সমর্থন পাবে। কিন্তু, সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে, ৩৫ বছরের স্বাধীনতার দৌলতে রাশিয়াকে বিদেশ বলেই মনে করছেন ইউক্রেনের নাগরিকরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সকলেই রুশ সেনাকে নির্ভীক কণ্ঠে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন, 'আপনারা ইউক্রেনে এসেছেন কেন?'
আরও পড়ুন Russia-Ukraine crisis Live: খারকিভে রুশ সেনা, বেলারুশে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান জেলেনস্কির
যার ফলে কে সাধারণ মানুষ, আর কে ইউক্রেনের সেনা, সেটা বেছে নেওয়া রুশ সেনার কাছে ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়েছ। রাশিয়ার সেনাবাহিনী তাই অনেক জনবহুল এলাকাতেও নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। কারণ, দেশরক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকরাও এখন তাঁদের কাছে শত্রু।
তবে, ভারতীয়দের রক্ষে! যে ক্রোমোজম আলাদা। চেহারা-ছবি আলাদা। বিদেশি বলে বুঝে নেওয়া রুশ সেনার পক্ষে তাই কঠিন হবে না। কিন্তু, সেসব তো পিছন থেকে আর বোঝা সম্ভব না। তাই পিছন থেকে যে কোনও মুহূর্তে শরীরে বিঁধে যেতেই পারে কালাশনিকভের গরম বুলেট। এসব জেনেও ইউক্রেনে ফিরতে চান এদেশে চলে আসা ভারতীয় পড়ুয়ারা। অবশ্য এই পরিস্থিতির মধ্যে না। তাঁদের আশা, শিগগিরি যুদ্ধ থেমে যাবে। আর, ডাক্তারির অসমাপ্ত পাঠ তাঁর আবার আগের মতোই শেষ করতে পারবেন ইউক্রেনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। যার সাহায্যে তাঁদের নামের সঙ্গে চিকিৎসকের তকমা লেগে যাবে। ভারত তো বটেই। ইউরোপের বিভিন্ন হাসপাতাল, এমনকী আমেরিকার হাসপাতালেও চিকিৎসা করার সুযোগ তাঁরা পাবেন।
আরও পড়ুন সীমান্তের কুস্তি থেকে রাষ্ট্রসংঘে একই সুর, ভারত-চিনের অবস্থানটাই বদলে দিল ইউক্রেন