পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার ৪০ দিন উপলক্ষে বুধবার মাহসা আমিনির নিজের শহর সাকেজের কবরস্থানে জড় হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের লক্ষ্য করে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়েছে। এমনটাই দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'ইরান পুলিশের দাঙ্গা দমনকারী বাহিনী গুলি চালিয়েছে। মাহসার স্মৃতি পালনের অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাসিন্দারা শ্রদ্ধা জানাতে জড় হয়েছিলেন। তাঁরা কবরের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে শোকজ্ঞাপন করছিলেন। সেই সময় ইরানের পুলিশ বিনা প্ররোচনায় তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।'
শুধু গুলি চালানোই নয়। বেশ কয়েকজনকে ধরেও নিয়ে গিয়েছে ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী। এমনটাই দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরান পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। ২২ বছর বয়সি যুবতী মৃ্ত্যুর আগে রীতিমতো সুস্থ ও সবল ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাঁর ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। তাতেই মৃত্যু হয়েছে মাহসার। এই ঘটনার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিক্ষোভ ছড়িয়েছে ইরানের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশ ও বিক্ষোভকারী জনতার মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে ইসলামিক দেশটির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
আরও পড়ুন- ঘুরিয়ে অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার হুমকি, ‘রাজ্যপালের ক্ষমতা সীমিত’, জবাব কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর
১৯৭৯ সালে প্রথম বিদ্রোহের মধ্যে দিয়ে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের রূপ নেয় ইরান। সেই সময়কার বিক্ষোভ আর বিদ্রোহের দিনগুলোকে যেন স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে মাহসা আমিনির মৃত্যুতে তৈরি হওয়া বিক্ষোভ। যা ইরানের ধর্মীয় নেতাদের দিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। আর, সেই কারণেই কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমন করতে চাইছে ইরান। তাদের অভিযোগ, এই বিক্ষোভের পিছনে ইজরায়েল তো বটেই, আমেরিকা-সহ ইরান-বিরোধী পশ্চিমের দেশগুলোর প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে।
পালটা বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তাঁরা ধর্মের নামে স্বৈরাচার মেনে নিতে পারছেন না। সেই কারণেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। পুলিশ পালটা, তাঁদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে। বিনা দোষে গ্রেফতার করছে। হেফাজতে থাকাকালীন অত্যাচার চালাচ্ছে। তারপরও হিজাব খুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিক্ষোভকারী মহিলারা। কারণ, ঠিকমতো হিজাব না-পরার জন্যই গ্রেফতার করা হয়েছিল মাহসা আমিনিকে। যা ইরানের আইন অনুযায়ী গর্হিত অপরাধ।
Read full story in English