Advertisment

মণিপুরে ভিডিও কাণ্ডে নয়া মোড়, পুলিশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন নির্যাতিতা তরুণী

কী অভিযোগ?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"Delhi Commission for Women,DCW chief,Swati Maliwal,Manipur,Kangpokpi

'মণিপুরে ভিডিও কান্ডে নয়া মোড়। পুলিশের বিরুদ্ধেই বিরাট অভিযোগ আনলেন হেনস্থার স্বীকার হওয়া সেই মহিলা। অভিযোগ সামনে আসতেই চূড়ান্ত শোরগোল। মণিপুরে ভিডিও কাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। এরমাঝেই ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, "মণিপুরের এই ঘটনা সাংবিধানিক অপব্যবহারের সবচেয়ে বড় নির্দশন... সরকার যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে শির্ষ আদালত হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে”।

Advertisment

সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের সভাপতিত্বে একটি বেঞ্চ অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটারমানি এবং সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে ঘটনার গুরুত্ব ব্যাখা করে জানিয়েছে আদালত সরকারকে মণিপুর পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু সময় দেবে, সরকার ব্যর্থ হলে আদালত হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।

এদিকে স্বামীর বাড়ি থেকে ফোনে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময় হেনস্থার স্বীকার হওয়া তরুণী অভিযোগ করেন, “পুলিশ সেদিন জনতার সঙ্গে ছিল, আমাদের গ্রামে আক্রমণ হয়। প্রাণ বাঁচাতে গ্রামের কিছু দূরে জঙ্গলে আশ্রয় নিই। পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে গ্রাম থেকে একটু দূরে নিয়ে যায় এবং সংঘর্ষের মাঝে জনতার সঙ্গে ছেড়ে দেয়। পুলিশই আমাদের তাদের কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে।”

অভিযোগে, তরুণী জানায় যে 'কাংপোকপি জেলায় তাদের গ্রামে আক্রমণের পরে তারা আশ্রয়ের জন্য কাছেই একটি জঙ্গলে পালিয়ে যায় এবং পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় জনতা পুলিশের পথ আটকায়। থানা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পুলিশের হাত থেকে ছিনতাই করা হয় আমাদের'। অভিযোগে আরও বলা হয়, "প্রকাশ্য দিনের আলোতে নির্মমভাবে গণধর্ষণ করা হয়"।

তরুণী জানান সেদিন তারা ৫ জন ছিলেন। যদিও ভিডিওতে ২ মহিলাকে দেখা যায়। অন্য এক মহিলা যার বয়স প্রায় ৫০ ছুঁইছুঁই তার ওপর বর্বরোচিত অত্যাচার চালান হয় বলেই অভিযোগ। মহিলার বাবা এবং ভাইকে মেরে ফেলার অভিযোগও উঠেছে জনতার বিরুদ্ধে। মহিলা ফোনে আরও জানান, ‘মণিপুরে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ভিডিও’র বিষয়ে আমরা কিছুই জানতে পারিনি’। অনেকের মধ্যে একজনকে চিনতে পেরেছেন তিনি। তিনি তার ভাইয়ের বন্ধু ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের খোঁজে চলছে তল্লাশি অভিযান।  

এদিকে মণিপুরের ভিডিও কাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল তিনটি দাবি তুলে ধরেছেন। তার মধ্যে রয়েছে মণিপুর হিংসা বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া লোকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং মহিলাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে এই চিঠিতে। চিঠিতে, স্বাতী মালিওয়াল আরও লিখেছেন, এনডিএ বৈঠকের জন্য ৩৮টি দল মিলিত হয়েছে কিন্তু আমি প্রশ্ন করতে চাই, মণিপুর কেন জ্বলছে তা নিয়ে কোন দলের কোন প্রতিনিধি কী প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রশ্নও করেছে? মণিপুরে ডবল ইঞ্জিন সরকার রয়েছে। বিজেপি কেন রাজ্যের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। মণিপুর জ্বলছে এবং বিজেপি নেতা পাঁচতারা হোটেলে মিলিত হচ্ছেন”।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো মণিপুর হিংসা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন যৌন হয়রানির ভিডিও প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "এমন ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ঘটনাটি যে কোন সুশীল সমাজের জন্য লজ্জাজনক।" তিনি আরও বলেছেন, ‘কোন ধর্ষককে রেয়াত করা হবে না। নারীদের সুরক্ষায় আমাদের রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে হবে’। ইতিমধ্যে ভিডিওকাণ্ডে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এসবের মাঝে কেন্দ্রীয় সরকার টুইটার এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির ওপর জারি করা একটি আদেশে নির্দেশ দিয়েছে যে মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন করে প্রকাশ্যে যৌন হয়রানির ভিডিও যাতে শেয়ার না হয় তা অবিলম্বে নিশ্চিত ও কার্যকর করতে হবে।  

Manipur
Advertisment