অবশেষে মেয়েদের গাড়ি চালানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহৃত হচ্ছে সৌদি আরব থেকে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে সে দেশে মহিলাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া শুরু হল সোমবার।
দশজন সৌদি মহিলা তাঁদের বিদেশের লাইসেন্স ইতিমধ্যে সৌদি আরবে ট্রান্সফার করেছেন। তাঁরা সৌদির একাধিক শহরে গাড়ি চালাতে পারবেন, যার মধ্যে রয়েছে রাজধানী রিয়াধও। আগামী ২৪ জুন থেকে মহিলাদের গাড়ি চালানোর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
সৌদি আরব প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে অন্তত ২০০০ মহিলা ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।
লাইসেন্স হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত সৌদি মন্ত্রকের কর্মী রেমা জাওদাত। এর আগে লেবানন ও সুইজারল্যান্ডের রাস্তায় গাড়ি চালিয়েছেন তিনি। জাওদাত বলেছেন, ‘‘ভাবতেই পারছি না সৌদির রাস্তা দিয়ে আমি গাড়ি চালাতে পারব। গাড়ি চালানো মানে আমার কাছে যাতায়াতের স্বাধীনতা। এখন আমরা সে স্বাধীনতা পেলাম।’’
মেয়েদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তুতি হিসেবে নতুন এক আইন পাশ করেছে সৌদি প্রশাসন। এবার সে দেশে যৌন নিগ্রহকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ অপরাধের শাস্তি হবে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও ৩০ হাজার রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা।
সৌদি আরবই এতদিন পর্যন্ত ছিল পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়েদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ ছিল। যা নিয়ে বিশ্বব্যাপী কঠোর সমালোচনার মুখেও পড়তে হত তাদের।
সৌদি আরবের ভাবমূর্তি পাল্টাতে উদ্যোগী হয়েছেন যুবরাজ মহম্মদ। সম্প্রতি সে উদ্দেশ্যে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। তাঁর অন্যতম লক্ষ্য দেশে মহিলাদের উপর যে সব নিষেধাজ্ঞা জারি করা রয়েছে, সেগুলিকে প্রত্যাহার করা।
স্বঘোষিত এই সংস্কারক সৌদি আরবে দীর্ঘদিন ধরে চলা সিনেমার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন, কনসার্টে নারী-পুরুষের একত্র যোগদান অনুমোদন করেছেন, এবং ধর্মীয় পুলিশদের ক্ষমতা ছেঁটেছেন।
তবে তাঁর সংস্কার প্রক্রিয়াও প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নেই। গত সপ্তাহেই দেশের ‘নিরাপত্তা বিঘ্নিত’ করার জন্য ১৭ জনকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
যাঁদেরকে আটকে রাখা হয়েছে তাঁদের মধ্যে অনেকেই মহিলাদের গাড়ি চালানোর অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন বলে জানিয়েছে অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ১৭ জনের মধ্যে ৮ জনকে ইতিমধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যে ৯ জনকে এখনও আটকে রাখা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৪ জন মহিলা বলে জানা গিয়েছে।