পেগাসাস মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বিস্তারি হলফনামা দিতে অস্বীকার করল কেন্দ্রীয় সরকার। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ বলে সোমবার শুনানিতে জানিয়েছেন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহেতা। কেন্দ্রের দাবি, হলফনামায় তথ্য দাখিল করলে সন্ত্রাসবাদ ঠেকাতে কী সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তা জেনে গিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে পারে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। তাই ডোমেইন বিশেষজ্ঞদের সামনেই এই ইস্যুতে নথি জমা ও বিতর্ক হতে পারে বলে মনে করছে কেন্দ্র।
শীর্ষ আদালতে এ দিন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহেতা জানিয়েছেন যে, 'এ সফটওয়্যার, নাকি বি সফটওয়্যার দিয়ে এই কাজ হয়েছে কিনা তা হলফনামায় উল্লেখ করা যাবে না। সরকারের সঙ্গে সম্পর্কহীন ডোমেইন বিশেষজ্ঞদেরই এই কাজ করা উচিত। সরকার একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়বে। এ সংক্রান্ত সব নথি তাদের সামনেই পেশ করবে কেন্দ্র। জাতীয় স্বার্থে এই ধরণের আলোচনা সর্বসমক্ষে হওয়া উচিত নয়।'
ইজরাইলের পেগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার করছে কেন্দ্র। গোপনে নজরদারি চালানো হচ্ছে বিরোধী দলের নেতৃত্ব সহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রখ্যাত মানুষদের উপর। এই অভইযোগ তোলে বিরোধী দলগুলি। তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটি আবেদন জমাম পড়ে। প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দ্র। এই ঘটনার তদন্তে নিরপেক্ষ একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করার দাবি তোলে কেন্দ্র। প্রকাশ্যে বিতর্ক না করারও দাবি করা হয়।
তখন আদালত জানিয়েছিল যে, মামলাকারীদের বিচার ব্যবস্থার উপর ভরসা রাখতেহবে। পাশাপাশি কোর্টের বাইরে সমন্তরাল আলোচনা এবং বিতর্ক করা থেকে মামলাকারীকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই শুনানিতেই পেগাসাস ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হলফনামা তলব করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। এ দিন যা দিতে অস্বীকার করে কেন্দ্র।
সলিসিটার জেনারেলের দাবির প্রত্যুত্তরে প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা আরও বলেন, 'জাতীয় সুরক্ষা বা প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত কোন তথ্য জানার ইচ্ছে আমাদের নেই। কিন্তু গুরুতর প্রশ্ন হল, সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে কিনা। অর্থাৎ, আইন স্বীকৃত কোনও পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারক এবং অন্যদের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে কিনা।'
মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী কপিল সিবালের বক্তব্য, 'কেন্দ্র তথ্য গোপন করতে চাইছে। কেন্ ওদের কমিটি গঠন করতে দেওয়া হবে?'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন