তরুণ প্রজন্মকে একটা বড় অংশ বিদেশে, বিশেষ করে ইউরোপ এবং কানাডায় উচ্চ শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের জন্য চলে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন কেরলের ক্যাথলিক চার্চ। রাজ্যে থেকেই যাতে তারা উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানে আগ্রহী হয়ে ওঠে সেই লক্ষ্যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে।গত দু'মাস ধরে, চার্চের বিভিন্ন শাখা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরে, সরকারি চাকরিতে যুবকদের আগ্রহ তৈরির লক্ষ্যে কর্মসূচি চালু করেছে।
সাইরো-মালাবার চার্চ, কেরালার সংখ্যাগতভাবে প্রভাবশালী খ্রিস্টান গির্জাগুলির মধ্যে অন্যতম। ইতিমধ্যেই চার্চের বিপুল সংখ্যক সদস্য বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রান্তে পাড়ি দিয়েছেন। একটি যৌথ বিবৃতিতে, চার্চের বিশপরা বলেছেন যে কেরল থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার ঘটনা এক "সামাজিক সংকট" তৈরি করছে।
চার্চের তরফে বলা হয়েছে “শান্তিপূর্ণ এবং আরামদায়ক জীবনের লক্ষ্যে, আমাদের যুবকরা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। কেরলে সংখ্যা কমে যাওয়া খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের জন্য এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যা এক সামাজিক সংকট তৈরি করেছে, ''।
রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারগুলিতে চাকরির শূন্যপদের কথা উল্লেখ করে, বিশপের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে: "আমাদের সন্তানরা যদি এই সুযোগগুলি কাজে লাগায়, স্কুল এবং কলেজ থেকেই এই লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করে তবে তারা অনায়াসেই তা অর্জন করতে পারে”।
কেরালা ক্যাথলিক বিশপস কাউন্সিলের (কেসিবিসি) ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ফর জ্যাকব পালাক্কাপিলি বলেছেন, “আমাদের সম্প্রদায়ের যুবকরা অনেক প্যারিসে, উচ্চশিক্ষা বা চাকরির জন্য যাচ্ছে। অনেকে স্টুডেন্ট ভিসায় যায় এবং পরে বিদেশে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করে, যার ফলে তারা তাদের পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়। অনেক খ্রিস্টান পরিবারে, কেবল বয়স্ক ব্যক্তিরা রয়েছে্ন,”। এরই প্রভাব পড়েছে রাজ্যের অর্থনীতিতে। চার্চ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, “কেরলে, জীবনের সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের উপস্থিতি কমে আসছে। চার্চ আশা করে যে দেশে সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তোলার নতুন উদ্যোগ যুবকদের অন্তত একটি অংশের মধ্যে এই প্রবণতা কমাতে সাহায্য করবে,”।
কেরল মাইগ্রেশন সার্ভে ২০১৮ অনুসারে, সারা বিশ্বে রাজ্য থেকে প্রায় ২১ লক্ষ মানুষ পাড়ি দিয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের চেয়ার প্রফেসর এস ইরুদয়া রাজন বলেছেন: “শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের জন্য কেরল থেকে বিদেশে যাওয়ার হিড়িক আগের থেকে অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগে ২৫ বছরের বেশি বয়সীরা যেতেন, কিন্তু এখন আমরা ১৮ বছর বয়সে ছাত্রদের চলে যেতে দেখছি,” ।