Durga Puja 2021: মেরে পাস মা হে! দিওয়ার ছবির বিখ্যাত সংলাপ এখন বলিউডে মিথ হয়ে গিয়েছে। এবার ‘ভাগের মা’ ভাবনাকে বড়িশা ক্লাবে ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী রিন্টু দাস। গতবার পরিযায়ী মায়ের ভাবনা ফুটিয়ে তুলে ভাইরাল হয়েছিল বড়িশা ক্লাবের পুজো। এবারও সাম্প্রতিক ইস্যুকে ঘিরেইস এজে উঠছে পুজো মণ্ডপ। এবারের ভাবনা প্রসঙ্গে শিল্পী রিন্টু দাস বলেন, ’৪৭-এর দেশ ভাগের সময় বাক্স-প্যাটরা সন্তানদের নিয়ে পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গ চলে এসেছিলেন মায়েরা। তাঁদের চোখে-মুখে ছিল একরাশ হতাশা, উদ্বাস্তু হওয়ার বেদনা এবং মূল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার যন্ত্রণা। তারপর স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও দেশব্যাপী আতঙ্ক এবং অস্থিরতা। এবারেও ছিন্নমূল এবং উদ্বাস্তু হওয়ার আতঙ্ক গ্রাস করতে শুরু করেছে আমাদের মনে। ঠিক মতো নথি-কাগজ না দেখালে, এবারেও কি সন্তানদের কোলে নিয়ে আগের মতোই ভিটে-মাটি ছাড়তে হবে মায়েদের? ডিজিটাল ভারতে দাঁড়িয়ে কেন ফের উসকে উঠছে দেশভাগের স্মৃতি? কোথায় যাবেন তাহলে মায়েরা? মায়ের ভাগ তাহলে কার থাকবে? পূর্ববঙ্গের না পশ্চিমবঙ্গের? না উদ্বাস্তু জীবনই ভবিতব্য।’
এই ভাবনার রূপায়ন এবার বড়িশা ক্লাবের ‘ভাগের মা’। এই থিমের পিছনে একটি ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ আছে, যা জুড়েছে রাজা বল্লাল সেনের রাজত্বকে। সেই ইতিহাস প্রসঙ্গে পুজো কমিটির সদস্য সপ্তর্ষি জানা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেছেন, ‘সময়টা ১২০০ সাল। বাংলার সিংহাসনে তখন ধর্মপ্রাণ রাজা বল্লাল সেন । তিনি এক রাতে মহিষমর্দিনী দশভূজার স্বপ্ন দেখেন । স্বপ্নের আদেশ মতো ঢাকার (অধুনা বাংলাদেশ) নিকটবর্তী এক জঙ্গল থেকে দেবী দশভুজার একটি বিগ্রহ উদ্ধার করেন তিনি। বিগ্রহটি আচ্ছাদিত বা ঢাকা ছিল বলে তিনি এর নামকরণ করেন "ঢাকেশ্বরী” এবং প্রতিষ্ঠা করেন "ঢাকেশ্বরী" মন্দিরের।‘
তিনি বলেন, ‘ঢাকেশ্বরী মন্দির ঢাকায় অবস্থিত হলেও দেবী ঢাকেশ্বরীর আদি বিগ্রহটি এখন কলকাতার কুমোরটুলির অঞ্চলে দুর্গাচরণ স্ট্রিটে ঢাকেশ্বরী মাতার মন্দিরে পূজিত হচ্ছেন । ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় অন্য সবকিছুর সঙ্গে মায়ের আদি বিগ্রহটি চলে আসে এখানে। কয়েকলক্ষ মানুষের সঙ্গে মা-ও উদ্বাস্তু হয়ে চলে আসেন কলকাতায়।‘ এত বছর পরেও কেন ভিটে-মাটি হারানোর অতীতের স্মৃতি ঘুরেফিরে আসছে? ফের কি তাহলে উদ্বাস্তু হওয়ার আশঙ্কা? এবার তাহলে কোথায় যাবেন মা? কোন ঠিকানায়? মায়ের ভাগ তাহলে কে পাবে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এবার বড়িশা ক্লাবের ভাবনায় ‘ভাগের মা।‘
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ, এদিন এই পুজোর উদ্বোধন করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজকদের ভাবনা এবং রূপায়নে আপ্লুত তিনি। গতবারের পরিযায়ী মায়ের মতোই এবারের ভাগের মা-কে সংরক্ষণ করার ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন