Kolkata: করোনা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় আসতে বাধ্য করা হয়েছে এক পড়ুয়াকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসের। জানা গিয়েছে, যে পড়ুয়া এই অভিযোগ এনেছেন, তাঁর নাম উষসী চক্রবর্তী। মাস্টার অফ সোশাল ওয়ার্ক বা এমএসডবলু-র স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির জন্য নথি যাচাই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার, এই দু’দিন যাবৎ নথি যাচাইয়ের কাজ চলেছে। উষসী করোনা সংক্রমিত জেনেও তাঁকে কলেজের এক অশিক্ষক কর্মী ফোন করে সশরীরে উপস্থিত হতে বলেন। পুরো বিষয়টাই ওই পড়ুয়া সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে ফোনে উষসীর অভিযোগ, ‘আমাকে রাজু দাস নামে এক অশিক্ষক কর্মী ফোনে নথি-সহ সশরীরে উপস্থিত হতে বলেন। আমি তাঁকে জানাই আমার সংক্রমণের খবর। সেই খবরে সে পাত্তা না দিয়ে উলটে আমাকে বলে, আপনি সশরীরে না আসলে আটকে যাবে ভর্তি প্রক্রিয়া। তখন আমি বাধ্য হয়ে সংক্রমিত অবস্থায় বিশ্ব বিদ্যালয় পৌঁছই। আমার নথি যাচাইয়ের পর আমাকে সেগুলো ফটোকপি করে আনতে বলা হয়। তখন আমি শারীরিক অসুস্থতা এবং সংক্রমণের কথা জানাই।‘
হেনস্থার অভিযোগ তুলে সেই পড়ুয়ার মন্তব্য, ‘সেকথা শুনে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মী বলেন তাহলে আপনি করোনা নিয়ে এলেন কেন? আমি রাজু দাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সব বিস্তারিত বলি। এরপরই সংশ্লিষ্ট কক্ষে উপস্থিত অন্যরা বলেন আপনি বাড়ি চলে যান। নথিগুলো হোয়াটসঅ্যাপ করে দিন। ফের আমাকে বাড়ি এসে নথি হোয়াটসঅ্যাপ করি। যদিও আমি জানি না সেই নথি গৃহীত এবং আমার ভর্তির আবেদন গ্রাহ্য হয়েছে কিনা। তবে কোনও এক সংবাদমাধ্যমে অধ্যক্ষা বলেছেন হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া নথি গৃহীত হয়েছে এবং আমার ভর্তির আবেদন গ্রাহ্য হয়েছে।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে উষসী আরও জানান, তবে এই অধ্যক্ষাই অন্য এক সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন তিনি গোটা বিষয়ে কিছুই জানতেন না। ও বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট থেকে নম্বর নিয়ে তাঁকে ফোন করলেই এই অসুবিধার মুখে পড়ত হতো না। এই গোটা বিষয়ে যার নাম উঠে আসছে সেই অশিক্ষক কর্মী রাজু দাসকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে যোগাযোগ করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গিয়েছে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্র দাবি করেছে, নথি যাচাইয়ের তারিখ আগে ছিল। কিন্তু সেই ছাত্রী না আসায় সেটা পিছিয়ে ৬ এবং ৭ ডিসেম্বর করা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে উষসীর দাবি, ‘এমন কোনও তারিখের কথা আমি জানতাম না। প্রমাণ চাইলে ওরা দিতে পারবে না। ৬ তারিখ আমাকে ফোন করে নথি যাচাইয়ের জন্য আসতে প্রথম আসতে বলা হয়। কিন্তু সেই সময় আমার উপসর্গ আছে, সেই বিষয়টা রাজু দাসকে জানাই। কিন্তু উনি সেসবকে আমল দেয়নি। শুক্রবার অর্থাৎ আজ আমার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সেটাও আমি রাজু দাসকে জানাই। কিন্তু উনি বাধ্য করেন আমাকে ক্যাম্পাসে আসতে।‘
তাঁর থেকে যদি ক্যাম্পাসের অন্য কেউ সংক্রমিত হয়। সেই দায় আমার নয়। এভাবেও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন উষসী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে পড়তে থাকুন