Advertisment

'আমরা জানতাম, ও ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে' ফিরে দেখলেন অভিজিতের মাস্টারমশাই

অঞ্জনবাবুর সেদিনের কোথাও মনে আছে, যেদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেও ভর্তির সুযোগ পান নি অভিজিৎ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Nobel Prize abhijeet banerjee

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অন্দরে। এক্সপ্রেস ফোটো

অমর্ত্য সেনের পর কি ফের কোনও বাঙালিকে অর্থনীতির জন্য নোবেল দেওয়া হবে? কিন্তু তাঁর যা কাজ রয়েছে, না দিয়েও বা পারবে কী করে? গত বেশ কয়েক বছর ধরে এই ধরনের জল্পনা চলছিল অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে। এমনটাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অঞ্জন মুখোপাধ্যায়, যিনি একসময় অভিজিতের শিক্ষক ছিলেন।

Advertisment

"অনেকদিন ধরেই আমরা ভাবছিলাম যে হয়ত হবে, হয়ত পেয়ে যাবে। অমর্ত্যদা পেয়ে গেলেন। তখন আবার ভাবলাম যে একজন বাঙালি অর্থনীতিতে নোবেল পেয়ে গিয়েছেন, আরও একজন বাঙালিকে কি দেবে? সেইসব মজার তর্ক চলছিল," ফোনে বললেন অঞ্জনবাবু।

অভিজিৎ এবং তাঁর স্ত্রী এস্থার ডাফলোর নোবেল জয় প্রসঙ্গে অঞ্জনবাবুর বক্তব্য, "ওদের কাজকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ওদের বইটা প্রকাশিত হওয়ার পর। লোকে বইয়ের দিক থেকেও দেখে তো। মনে হয়েছিল, এবার পেয়ে যাওয়া উচিত। বইটাও তো প্রকাশিতে হয়েছে আজ চার-পাঁচ বছর।" যে বইটির কথা অঞ্জনবাবু বলছেন, তার শীর্ষক 'Poor Economics: A Radical Rethinking of the Way to Fight Global Poverty', প্রকাশিত হয় ২০১১ সালে।

আরও পড়ুন: কেন অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন অভিজিৎ বিনায়করা?

প্রসঙ্গত, অঞ্জনবাবুর নিজের শিক্ষক ছিলেন অভিজিতের বাবা, তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজের অর্থনীতির কিংবদন্তী অধ্যাপক তথা বিভাগীয় প্রধান, প্রয়াত দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিজিতের কলেজের সতীর্থরা তাঁকে এখনও তাঁর ডাকনামেই চেনেন - 'ঝিমা'। অঞ্জনবাবু বলেন, "আমরা জানতাম ও খুব ভালো ছাত্র। ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে। ভালো ছাত্ররা সবসময় যে পরে সেই বিষয়ে ভালো কাজ করে তা তো নয়। তবে অভিজিৎ তার ধারা বজায় রেখেছে। পড়াশুনায় ইন্টারেস্ট ছিল। খুব শার্প, বুদ্ধিমান ছেলে।"

অঞ্জনবাবুর সেদিনের কথাও মনে আছে, যেদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেও ভর্তির সুযোগ পান নি অভিজিৎ। আজ তিনি জানালেন, "যতদূর মনে পড়ে, ১৯৮২-৮৪ ব্যাচ ছিল। ও স্ট্যানফোর্ডে পিএইচডির আবেদন করে সুযোগ পায়নি। আমি মাঝেমাঝে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতাম। আমি বলেছিলাম, কিন্তু ওখানে আবেদন করে নি। ওরা বলল, ও কি আসবে? আরও দু-এক জায়গায় আবেদন করে তারপর হার্ভার্ডে সুযোগ পেয়ে ভর্তি হয়ে গেল। পরে আমি স্ট্যানফোর্ডকে বলি, আপনারা তো অভিজিৎ বিনায়ককে সুযোগ দেন নি। সে তো ভালো কাজ করেছে।"

নোবেলজয়ী ছাত্রের সঙ্গে কথা হয়েছে? "আমি একটা ইমেইল পাঠালাম। যা হয়, আমার মতো লোকের সঙ্গে নোবেল প্রাইজ বিজয়ীর যোগাযোগ থাকে না," হেসে বলেন অঞ্জনবাবু। "আমি লিখলাম, খুব খুশি হয়েছি। ভালো থাক।"

nobel prize
Advertisment