অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন একই পরিবারের দুজন। তাঁরা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। তবে অর্থনীতিতে শুধু বাঙালি নোবেল পান নি। পেয়েছেন এক মারাঠীও। নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় বালিগঞ্জে নিজের বাড়িতে বসে বলেন, "আমি মারাঠী। মা যখন মারাঠী, তখন সেই প্রভাব কিছুটা তো ছেলের ওপর থাকবেই। ছেলে ও পুত্রবধূ একই সঙ্গে নোবেল পাওয়ায় আমি খুশি। বৌমা নোবেল পাওয়ায় আমি আরও উচ্ছ্বসিত।" মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিষ্টি ও ফুলের তোড়া পাঠিয়ে ইতিমধ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
অমর্ত্য সেনের পর অর্থনীতিতে অভিজিৎ বিনায়ক ও তাঁর স্ত্রী এস্থার ডাফলো নোবেল পেলেন। কিন্তু শুধুই কি পড়াশোনা? আর কী কী ভালবাসেন অভিজিৎ? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তারই হদিশ দিয়েছেন মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি যুক্ত ছিলেন কলকাতার সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ সোশাল সায়েন্সেস-এর অর্থনীতি বিভাগের সঙ্গে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্সি কলেজে অর্থনীতির দাপুটে অধ্যাপক তথা বিভাগীয় প্রধান ছিলেন বাবা দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বললেন নির্মলা দেবী?
"আমার কলকাতা ভালো লাগে। আমি এখানে চাকরি করেছি। ওর বাবাও চাকরি করেছে। ছেলেকে ছোট থেকে নিজের মত বড় হতে দিয়েছি। কিছু চাপিয়ে দিইনি। আমরা অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছি বলেই যে ও তাতে আগ্রহ দেখিয়েছে, এমন নয়। ছেলের নিজেরই সেদিকে ঝোঁক ছিল। আমরা বন্ধুর মত মেলামেশা করতাম। ওর বাবাও ছেলের বন্ধু ছিল। ওর বাবা বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতো।"
বালিগঞ্জের বাড়িতে নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: জয়প্রকাশ দাস
আর কী কী ভালবাসেন অভিজিৎ?
নির্মলা দেবীর কথায়, "ছেলে রান্না করতে খুব ভালবাসে। আমরা দুজনে মিলে কেক তৈরি করতাম। অভিজিৎ মাছের রেসিপি ভাল জানে। নানা ধরনের মাছের আইটেম করতে পারে। একই সঙ্গে খেলাধূলা করতেও ভালবাসে। টেবল টেনিস, লন টেনিস ভাল খেলে। গান শোনাতেও খুবই ইন্টারেস্ট ওর। বই পড়ার অভ্যাস তো রয়েছেই।" শুধু গান শোনা, রান্না করা বা খেলা নয়, ফি বছর পরিবার নিয়ে বিদেশে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন নোবেলজয়ী অধ্যাপক। নির্মলা দেবী বলেন, "ছেলে বেড়াতেও খুব ভালবাসে। গতবার তুর্কিমেনিস্তান নিয়ে গিয়েছে আমাকে। এবার থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা রয়েছে।"
আজ অনেকবার চেষ্টা করেও ছেলের সঙ্গে কথা বলতে পারেন নি মা। সন্ধ্যাবেলা ফোনে কথা বলার সময় কল ড্রপ করে যায়। তখনও আক্ষেপ করে নির্মলা দেবী বলেন, "কাল আমাকে বললে না?" পরে আমাদের বলেন, "আমি ছেলেকে বলতে চাই, তুই খুব ভাল করেছিস। তোর বাবা থাকলে খুশি হতো।"
অধ্যাপক অমর্ত্য সেন অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন। এবার দুই দশক পর একসঙ্গে দুজন। নির্মলা দেবী বলেন, "অমর্ত্য সেনের পরিবারের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক। ছেলেকে তিনি খুবই স্নেহ করেন।"