/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/10/abhijit-left.jpg)
অসীম দাশগুপ্তের কথায়, বামপন্থী অর্থনীতির যে ঘরানা, তার সঙ্গে অনেকটাই সাযুজ্য রয়েছে অভিজিৎদের ভাবনার
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের পদ্ধতি ভারতে প্রয়োগ করলে অর্থনীতিতে তার সুফল পাওয়া যাবে। এমনটাই মনে করেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত।
টেলিফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তিনি বলেন, "অভিজিৎদের নোবেল পাওয়ায় তিনি যারপরনাই আনন্দিত। যে কোনও একটি অর্থনীতিতে উন্নয়ন নির্ভর করে আর্থিক বৈষম্য কমানোর উপরে, এই কথাটাই অভিজিৎরা বলতে চেয়েছেন। এ কথা দীর্ঘদিন ধরেই আমরাও বলে আসছি। আরও একটা ব্যাপার উল্লেখযোগ্য যে উনি তাত্ত্বিক কারণেই এই নোবেল পাননি, এ ব্যাপারটা উনি প্রয়োগ করেছেন, যেটা আরও গুরুত্বপূর্ণ।"
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: কেন অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন অভিজিৎ বিনায়করা?
"এ ধরনের গবেষণা ভারতের মত দেশগুলির ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর হতে পারে। আমরাও অনেকদিন ধরে বলছি যে দু ধরনের উন্নয়নের কথা বলা হয়ে থাকে। প্রথমটা হল আমাদের দেশে যে পদ্ধতিটা ভাবা হয়ে চলেছে ১৯৯১ সাল থেকে, যেখানে উন্নয়নের জন্য বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়া যেতে পারে, বিদেশি বিনিয়োগ আনা যেতে পারে। এই ভাবনায় বৈষম্যের বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে ভাবাই হয় না। মনে করা হয়, বৈষম্য এমনিই কমবে।"
অসীম দাশগুপ্তের দাবি, এ পদ্ধতি যে যথাযথ নয় তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। গত কয়েক দশক ধরে উৎপাদনেও যে অধোগতি এসে গিয়েছে সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, "আমরা এর বিকল্প চাই। আমরা বলছি, চাহিদা বৃদ্ধি করা হোক। দশের আভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়িয়ে তোলা হোক গ্রামাঞ্চলে বাস যে অধিকাংশ মানুষের তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে।" অসীমবাবুর কথায়, "তার জন্য ভূমিসংস্কার করা যেতে পারে, সেচে জল পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে, বা ফসলের ন্যায্য দাম পাইয়ে দেওয়া সুনিশ্চিত করা যেতে পারে"।
অসীম দাশগুপ্তের কথায়, বামপন্থী অর্থনীতির যে ঘরানা, তার সঙ্গে অনেকটাই সাযুজ্য রয়েছে অভিজিৎদের ভাবনার। "অভিজিৎরা যেভাবে বলছেন যে জনশিক্ষা ও জনস্বাস্থ্যের খাতে আরও বেশি করে খরচ করা হোক, তা একেবারেই বামপন্থীদের সঙ্গে মেলে। মনে রাখতে হবে আরেক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও একই কথা বলে এসেছেন, বলে চলেছেন।"
আরও পড়ুন, ‘কেমন আছ, কী খেলে’ এসব নয়, আমাদের মধ্যে শুধুই অর্থনীতি-র কথা হতো’
অসীম দাশগুপ্ত মনে করেন, সরকার যদি এ নীতি গ্রহণ বা প্রয়োগ না করে, তাহলেও তার প্রয়োগ ভারতে ঘটানো সম্ভব। কী করে? প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বললেন, "সরকার যদি নাও এগিয়ে আসে, অসরকারি ভাবে কোনও সংস্থা যদি এগিয়ে আসে, যেটুকু এগিয়ে আসবে সেটুকুই মঙ্গলজনক হয়ে উঠবে।" এ ব্যাপারে অমর্ত্য সেনের প্রতীচী ট্রাস্টের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের সমস্ত কাজই গুরুত্বপূর্ণ।
কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারে প্রতিশ্রুত 'ন্যায়' প্রকল্পের সঙ্গে অভিজিৎ বিনায়কদের কাজের কোনও মিল অবশ্য তিনি পাচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের এই নেতা।