১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি আনন্দ পটবর্ধনের ছবি 'রাম কে নাম' ছবির প্রদর্শন ঘিরে বিতর্কের আবহ তৈরি হল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। অবশ্য থেমে থাকেনি ছবিটির স্ক্রিনিং। প্রেসিডেন্সি থেকে অনুমতি না মেলায় অবশেষে সোমবার সন্ধ্যায় যাদবপুরের ওয়ার্ল্ড ভিউর উন্মুক্ত মঞ্চেই ছাত্রছাত্রীদের দেখানো হয় ছবিটি।
যাদবপুরের কলা বিভাগের স্টুডেন্টস ইউনিয়নের চেয়ারপার্সন সোমাশ্রী চৌধুরি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই আমাদের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করার অনুমতি দিয়েছেন। রেজিস্ট্রার নিজেই আমাদের ছবিটি প্রদর্শনের অনুমতি দিয়েছিলেন, এবং কোনও বাধা দেওয়া হয় নি।" এদিকে যাদবপুরে তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনের পরই সরগরম হয়ে ওঠে প্রেসিডেন্সি। সেখানকার শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছবিটি প্রদর্শনের জন্য ক্যাম্পাস অডিটোরিয়াম ব্যবহারের মৌখিক অনুমতি বিশ্ববিদ্যালয় দিলেও পরবর্তীতেই সেই নির্দেশ থেকে সরে আসেন কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, 'রাম কে নাম' ছবিটি দেখানো হবে বলেই এই সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরমহল।
কিন্তু কেন এমন অভিযোগ প্রেসিডেন্সির শিক্ষার্থীদের?
এই মাসেরই ২০ তারিখ 'রাম কে নাম' ছবিটির প্রদর্শন নিয়ে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রেফতার করা হয় ছ'জন শিক্ষার্থীকে। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই ছবিটির প্রদর্শনের সময় সোশিওলজি ডিপার্টমেন্টে এসে ছবিটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এমনকি ল্যাপটপ কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি ছ'জন ছাত্রছাত্রীকে গ্রেফতারও করা হয়।
আরও পড়ুন- অমিত শাহর পাইলট হতে চেয়ে কার্গিল নায়কের ‘ভুয়ো মেল’
সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রেসিডেন্সির গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কল্পক গুহ বলেন, "হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকার বার্তা দিয়ে ২৭ অগাস্ট (বুধবার) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ডকুমেন্টারি স্ক্রিনিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন হঠাৎই উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেন যে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে যেটি করা হলো তা অত্যন্ত দুঃখজনক, এবং এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে দেশে সাম্প্রদায়িকতা কতোটা বৃদ্ধি পাচ্ছে।"
আরও পড়ুন- মোদী সরকারকে বিরাট অঙ্কের টাকা দিচ্ছে আরবিআই
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্সির অপর এক ছাত্রের বক্তব্য, "আমরা ছবিটির প্রদর্শনের জন্য ডিনকে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছিলাম। তিনি আমাদের মৌখিক অনুমতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন তাঁরা জানলেন ছবিটি সম্পর্কে, তখনই জানিয়ে দিলেন যে ছবিটি অডিটোরিয়ামে দেখানো যাবে না। আমরা আবার কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানিয়েছি। এরপর অনুমতি আসুক কিংবা নাই আসুক, ছবিটি দেখানো হবে।"
প্রেসিডেন্সির ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণ কুমার মাইতি বলেন, "আমরা ওই ছবিটির জন্য কোনও অনুমতি দিইনি। অনুমতিই যখন দেওয়া হয় নি তখন ছবি বাতিলের কোনও প্রশ্নই উঠছে না। ওরা যদি অনুমতিপত্র পুনরায় জমা দেয়, তখন আমরা ভেবে দেখব।"
Read the full story in English