যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চরম হেনস্থা’র সময় দেবাঞ্জন বল্লভ তাঁর চুলের মুঠি ধরে টেনেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিলেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এবার সেই বাবুলের কাছেই করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন দেবাঞ্জনের মা। ছেলের বিরুদ্ধে যাতে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বাবুলের কাছে এক ভিডিও বার্তায় আর্জি জানিয়েছেন ওই ছাত্রের মা। এরপরই দেবাঞ্জনের মায়ের ভিডিওটি টুইট করে বাবুল সুপ্রিয় জানালেন, ‘‘চিন্তা করবেন না মাসিমা, আমি কোনও ক্ষতি করব আপনার ছেলের’’!
বাবুলের কাছে কী আর্জি জানিয়েছেন ওই যুবকের মা?
একটি ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, করজোড়ে কাঁদতে কাঁদতে বাবুল সুপ্রিয়ের উদ্দেশে দেবাঞ্জনের মা বলছেন, ‘‘ছোটো ভাইপো হিসেবে ক্ষমা করে দিন না। ভুল করে থাকলে ক্ষমা করে দিন। ও যেন কোনও রাজনীতি বা পুলিশে না জড়ায়’’। এদিন এই ভিডিটিই টুইট করেছেন বাবুল সুপ্রিয়।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে বাবুল নিগ্রহকাণ্ড: এক নজরে গোটা ঘটনা
চিন্তা করবেন না মাসিমা - আমি কোনো ক্ষতি করবো আপনার ছেলের !! ওর ভুল থেকে ও শিক্ষা নিক এটাই চাই ! আমি নিজে কারো বিরুদ্ধে কোনো FIR তো করিইনি - কারোকে করতেও দিইনি - আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না - তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন মাসিমা !
আমার প্রণাম নেবেন ???? pic.twitter.com/6YBgpKPqpo
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) September 21, 2019
কী বলেছেন বাবুল?
টুইটারে দেবাঞ্জনের মায়ের ভিডিও পোস্ট করে বাবুল লিখেছেন, ‘‘চিন্তা করবেন না মাসিমা, আমি কোনও ক্ষতি করব আপনার ছেলের। ওর ভুল থেকে ও শিক্ষা নিক, এটাই চাই। আমি নিজে কারও বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর তো করিইনি - কাউকে করতেও দিইনি - আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না - তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন মাসিমা’’।
আরও পড়ুন: ‘বাবুলের গায়ে যারা হাত দিয়েছে, তাদের হাত ভাঙব’, ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি দিলীপের
উল্লেখ্য, বাবুলের চুল ধরে টানছে এক যুবক, বৃহস্পতিবার যাদবপুর ক্যাম্পাসে এমন ছবিই ধরা পড়েছিল সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায়। সেই ছবির সাহায্যেই অভিযুক্তকে ফেসবুক থেকে খুঁজে বের করেন বাবুল সুপ্রিয়। দেবাঞ্জন নামে ওই যুবকের ছবি এবং সোশ্যাল প্রফাইলের স্ক্রিনশট টুইট করে তাঁকে খুঁজে বের করার আবেদনও জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। এরপরই শুক্রবার রাতে দেবাঞ্জন বল্লভের নামে স্বাক্ষরিত একটি তথাকথিত বিবৃতি সংবাদমাধ্যমের হাতে আসে। ওই বিবৃতিতে দেবাঞ্জন লিখেছেন, "১৯ সেপ্টেম্বর যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন বাবুল সুপ্রিয়, তখন এনআরসি ইস্যুতে বেশ কিছু প্রশ্ন করে কয়েকজন পড়ুয়া। এরপরই উনি ওঁর শারীরিক ক্ষমতা প্রদর্শন করতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা পড়ুয়াদের গায়ে হাত তোলে, ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করেন। মন্ত্রীমশাই এক ছাত্রীর গলা টিপে ধরেন, গালিগালাজ করেন। এমন সময় উনি আমার দিকে উদ্ধত হয়ে হাত চালাতে এলে আত্মরক্ষার জন্য হাতটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসি। এই ছবিটিকেই মিডিয়ার একাংশ বিকৃত করে প্রচার করছে। মন্ত্রীমশাই নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করছেন এটা। বিজেপির আইটি সেলও তা করছে। বিজেপির কর্মীদের দ্বারা গণপিটুনি খাওয়ানোর পরিস্থিতি তৈরি করছেন তিনি। এই অবস্থায় আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলের কাছে আবেদন করছি।"