বিজেপি-র সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে কিছুদিন আগেই তৃণমূলের ‘কাছাকাছি’ এসে জল্পনা বাড়িয়েছেন শোভন-বৈশাখী। এই জল্পনার আবহ এবার নতুন মোড় নিল। মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষার পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুধু কলেজ থেকেই নয়, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা’ থেকে অব্যাহতি চাইলেন শোভন-বান্ধবী। সরাসরি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেই এদিন পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, এর আগে কলেজের এক অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন বৈশাখী। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কাঁদতে কাঁদতে বৈশাখী বলেছিলেন, তাঁর সম্মান ভূলন্ঠিত হচ্ছে। এরপরই গত অগাস্ট মাসে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছিলেন বৈশাখী। যদিও বৈশাখীর ইস্তফাপত্র সেসময় গ্রহণ করেননি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
EXCLUSIVE: রাতে মন্ত্রীর ফোন বৈশাখীকে, ‘তুমি আছ বলেই লড়তে পারছ’
ইস্তফা প্রসঙ্গে কী বললেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়?
এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে অধ্যাপিকা বৈশাখী বলেন, ‘‘ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। কাজের পরিবেশ নেই। কলেজে কোনও শৃঙ্খলারক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ (ডিসিপ্লিনারি অথিরিটি) নেই, কীভাবে চলবে! তাই ইস্তফা দিলাম। কারণ, আমার জন্য যদি কলেজে এত সমস্যা হয়, তাহলে আমার সরে দাঁড়ানোই ভাল। আমার নৈতিকতায় বাধছে, আমার মনে হচ্ছে, আমাকে সরানোই যদি মূল উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে, তাহলে আমার জন্য কলেজকে কেন মারবে!’’। উল্লেখ্য, বৈশাখীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এর আগে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে বৈশাখী বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে বহুবার কথা হয়েছে। উনি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এক সপ্তাহ হল পরিচালন সমিতি তৈরি করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত বৈঠক করেনি। কলেজে কোনও কাজের পরিবেশ নেই’’।
আরও পড়ুন: ‘কোনওরকমে প্রাণ নিয়ে ফিরেছি’, মুকুলের গলায় আতঙ্কের সুর
এরপরই অভিমানের সুরে বৈশাখী বলেন, ‘‘শুধু কলেজ থেকেই নয়, শিক্ষা ব্যবস্থা থেকেই অব্যাহতি চাইলাম। চাইলে আমি বদলি নিতে পারতাম। কিন্তু তা করিনি। আমার মনে হয়েছে, পার্থদাকে আমি চিনি। ছোটো-বড় সমস্যা নিয়ে ওঁর কাছে যেতে পারি। উনি সেটা হয়তো শুনবেনও। কিন্তু সব বিষয়ে যদি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যেতে হয়, তাহলে মুশকিল। এটা প্রশাসনিক সংকট। তাই আমার মনে হয়েছে অব্যাহতি নেওয়া দরকার’’।
আরও পড়ুন: বাংলায় বিজেপির মনোবল তলানিতে? মুকুল-পুত্র-সব্যসাচীর সাংবাদিক বৈঠক ঘিরে প্রশ্ন
উল্লেখ্য, অগাস্ট মাসে ইস্তফা দেওয়ার বেশ কিছুদিন পর পুজোর আগে কলেজে গিয়েছিলেন বৈশাখী। সেদিন মিল্লি আল আমিন কলেজে বৈশাখীকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে। মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হেনস্থার অভিযোগ ওঠে কলেজেরই এক অধ্যাপিকা সাবিনা নিশাত ওমারের বিরুদ্ধে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন সাবিনা।