একাধিক চাঞ্চল্যকর মোড় পেরিয়ে অবশেষে মিল্লি আল আমিন কলেজের ‘টিচার ইন-চার্জ’ পদ থেকে অধ্যাপিকা তথা শোভন-বান্ধবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হয়েছে, এমনটাই দাবি স্বয়ং বৈশাখীর। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে মঙ্গলবার এ খবর জানালেন বৈশাখীই। এদিন বৈশাখী জানান, শোভনবাবু এ বিষয়ে বিশেষ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। শোভনকে উদ্ধৃত করে বৈশাখী বলেন, ‘‘আমাকে (শোভনকে) সামনে রেখে ওকে (বৈশাখীকে) আঘাত না করলেই ভাল হত। আমার কারণে ওর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করলে, সেটা দুঃখজনক’’। এরপরই শোভন-বান্ধবীর চাঞ্চল্যকর মন্তব্য, ‘‘যাঁরা বলছেন, শোভন রাজনীতিতে সক্রিয় হননি বলে আমায় সরানো হল। (তাঁদের উদ্দেশে বলতে চাই) আমি এমন দাসখত লিখে তো চাকরি করিনি যে আমি শোভনকে রাজনীতিতে সক্রিয় রাখব। উনি রাজনীতি করবেন কিনা, সেটা ওঁর আদর্শের ব্যাপার। আমার চাকরি বাঁচানোর জন্য ওঁকে নৈতিক জায়গায় আপস করতে দেব না’’।
বিস্ফোরক অভিযোগ বৈশাখীর
ইস্তফা প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘যেদিন ওয়েবকুপা থেকে সরানো হয়েছিল, সেদিন এই কথাই বলা হয়েছিল যে শোভনের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে আমায় সরানো হল। সেই থেকেই যা যা ঘটেছে আমার সঙ্গে, সবই ওঁকে সামনে রেখে করা হয়েছে। ঝিকে মেরে বউকে শেখানোর ঘুঁটি হয়ে গিয়েছিলাম আমি। আজ সেই ঘুঁটিটা শেষ হয়ে গেল। আমাকে নিয়ে (ওরা) আর কিছু করতে পারবে না’’। এরপর বৈশাখী আরও বলেন, ‘‘যাঁরা বলছেন, শোভন রাজনীতিতে সক্রিয় হননি বলে আমায় সরানো হল। (তাঁদের বলতে চাই) আমি এমন দাসখত লিখে তো চাকরি করিনি যে, আমি শোভনকে রাজনীতিতে সক্রিয় রাখব। ও রাজনীতি করবে কিনা, সেটা ওঁর আদর্শের ব্যাপার। আমার চাকরি বাঁচানোর জন্য ওঁকে নৈতিক জায়গায় আপস করতে দেব না’’।
আরও পড়ুন: ‘আমার পোশাকটা কি খারাপ?’, প্রশ্ন মমতার
শোভনের কী প্রতিক্রিয়া?
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ই বললেন, ‘‘শোভন যদি অতবড় পদ ছেড়ে মাথা উঁচু করে থাকতে পারে, তাহলে আমিও পারব। ও তো আমার ক্ষমতার স্তম্ভ। উনি এটাই বলছেন, আমাকে (শোভনকে) সামনে রেখে ওকে (বৈশাখীকে) আঘাত না করলেই ভাল হত’’।
আরও পড়ুন: রাতে মন্ত্রীর ফোন বৈশাখীকে, ‘তুমি আছ বলেই লড়তে পারছ’
কিন্তু তাঁর ইস্তফাপত্র যে গৃহীত হয়েছে সেকথা কি বৈশাখীকে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে? বৈশাখী জানাচ্ছেন, ‘‘মিল্লি আল আমিন কলেজের টিচার ইন-চার্জ পদে এক অধ্যাপিকার নিয়োগপত্রে আমার ইস্তফাপত্র গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ, আমায় কেউ একটা জানানোর প্রয়োজন করলেন না। এটা বেদনাদায়ক’’।
আরও পড়ুন: রাতে মন্ত্রীর ফোন বৈশাখীকে, ‘তুমি আছ বলেই লড়তে পারছ’
উল্লখ্য, মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষার পদ থেকে চলতি মাসের শুরুতে ইস্তফা দিয়েছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুধু কলেজ থেকেই নয়, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা’ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন শোভন-বান্ধবী। সরাসরি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানিয়েছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে শোভন-বান্ধবী আরও জানিয়েছিলেন, তাঁকে পদত্যাগ না করে সমস্যা সুরাহার প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগেও গত অগাস্টে পদত্যাগ করেছিলেন বৈশাখী। সেবার বৈশাখীর ইস্তফাপত্র নাকচ করে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস প্রসঙ্গে এদিন বৈশাখী বলেন, ‘‘উনি তো বারবার আশ্বাস দিচ্ছেন যে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু কোনও পদক্ষেপই করছেন না’’।