মাদক-কাণ্ডে গ্রেফতার বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। তাঁর দুই ছেলেকে আগেই আটক করেছে কলকাতা পুলিশ।যদিও পুলিশের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ তুলেছে রাকেশের পরিবার। পূর্ব বর্ধমানের গলসি থেকে গ্রেফতার বিজেপি নেতা। এদিন হাজিরা এড়ানোর পরেই রাকেশের বাড়িতে পুলিশ। প্রায় পৌনে ৩ টে থেকে ৫ ঘণ্টা ধরে চলে নাটক। তারপর সন্ধ্যার দিকে তাঁর বাড়িতে ঢুকতে সমর্থ হয় কলকাতা পুলিশ।
মাদক-কাণ্ডে দিন কয়েক আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী। ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে আলিপুর আদালতে তোলার সময় এই রাকেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছিলেন পামেলা। তাঁকে গ্রেফতার করা হোক এই দাবি ছিল পামেলার। পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল টাওয়ারের সুত্র ধরে তাঁর সন্ধান পায় পুলিশ। এদিন রাকেশের দিল্লি জাওয়ার কথা থাকলেও, টাওয়ার লোকেশন দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় রাজ্যেই আছেন তিনি। যদিও বেলা ১.৩০-এর পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর মোবাইল।
এরপর বিকেলের দিকে একবার মোবাইল অন হলে পুলিশ নিশ্চিত হয় পূর্ব বর্ধমানে আছেন রাকেশ। সজাগ করা হয় জেলা পুলিশকে। এরপরেই গলসি থানা আটক করে রাকেশকে। তাঁকে হেফাজতে নিতে পূর্ব বর্ধমানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা।
এর আগে বিজেপি নেতার বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে পুলিশ রাকেশ সিংয়ের দুই পরিচারককে গ্রেফতার করে। এদিকে এদিন সকালে হাইকোর্টেও ধাক্কা খেলেন বিজেপি নেতা। কলকাতা পুলিশের নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে তার উপর স্থগিতাদেশ জারির জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই বিজেপি নেতা। কিন্তু পুলিশ নিয়ম মেনেই সব কাজ করেছে বলে পর্যবেক্ষবেক্ষণে জানিয়েছে আদালত। এখনই কোকেন মামলার তদন্তে আদালত হস্তক্ষেপ করতে রাজি নয় বলে জানানো হয়েছে। বিজেপির নেতার করা হাইকোর্টে মামলা খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
কোকেন-কাণ্ডে ধৃত বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী আলিপুর আদালতে দাঁড়িয়ে এই রাকেশের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন। দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিং তাঁকে ফাঁসিয়েছে, তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার বিকেল চারটের মধ্যে রাকেশকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল।
পামেলার অভিযোগের পর কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রে’র অভিযোগ তুলে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দেন রাকেশ। কমিশনার সৌমেন মিত্রকে চিঠি দিয়ে সেকথা জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতা। চিঠিতে লিখেছিলেন, ফের যদি পামেলা তাঁর নাম নেয় তাহলে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন তিনি। এদিন রাকেশ জানিয়েছিলেন, তদন্তের স্বার্থে হাজিরা দিতে কোনও আপত্তি নেই তাঁর। তবে, কলকাতা পুলিশের উপর তাঁর ভরসা নেই। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান ও আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে ২৬ তারিখের পর লালবাজারে যাবেন তিনি।