দলের রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বঙ্গ বিজেপিতে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। তার মধ্যেই ভোট পরবর্তী হিংসার বর্ষপূর্তিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি নিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। গত বছরের মে মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস টানা তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছে। নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জেতার পরও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। দলের রাজ্য নেতৃত্বের অভিযোগ, বহু কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। এখনও বহু কর্মী ঘরছাড়া। তারই প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির পথে হাঁটতে চলেছে দল।
বর্তমানে আসানসোল লোকসভা এবং বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে হেরে রাজ্য বিজেপির নেতা ও কর্মীরা রীতিমতো হতাশ। তাঁদের সেই হতাশা কাটিয়ে চাঙ্গা করতে লাগাতার আন্দোলনই পথ বলে মনে করছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ২ মে রাজ্যের ' স্বৈরাচারী সরকার'-এর বর্ষপূর্তি। তারই প্রতিবাদে 'কালা দিবস' পালন করা হবে। যার অঙ্গ হিসেবে ভোট পরবর্তী হিংসার বলি পরিবারগুলোর সদস্যদের নিয়ে গণতন্ত্র বাঁচানোর দাবিতে ওই দিন শহর কলকাতার রাজপথে মিছিল করবেন বিজেপি নেতৃত্ব। আক্রান্ত বিজেপি নেতা-কর্মীদের জন্য বিচার চাইতে ৩ মে তাঁরা রাজ্যবাসীর দুয়ারে দুয়ারে যাবেন। সঙ্গে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া হয়েছে একবেলা অনশন কর্মসূচিও। কলকাতায় সেই কর্মসূচি পালিত হবে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে।
আরও পড়ুন- টিভি চ্যানেলগুলোয় দিল্লি হিংসা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কভারেজে রাশ টানল কেন্দ্র
এরপর ৪ থেকে ৬ মে, সফরে বাংলায় আসছেন প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর সফরের পর ৭ মে থেকে ফের শুরু হবে আন্দোলন। ৭ মে, নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় নিহত বিজেপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে যাবেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। নিহত দলীয় কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের হাতে টাকা তুলে দেবেন। পাশাপাশি, তুলে দেওয়া হবে পোশাকও। ৮ এবং ৯ মে, রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে মিছিল করবেন বিজেপি নেতৃত্ব। ১০ মে মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাঁরা সত্যাগ্রহ করবেন। যাবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কাছেও। ১১ মে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গৌরীশংকর ঘোষের মতো একাধিক বিধায়ক দলের রাজ্য নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ। প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন রাজ্য যুব সভাপতি সৌমিত্র খান, প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরার মতো অনেকেই। এই ভাঙাচোরা সংগঠন নিয়েই ২৪-এ লোকসভা নির্বাচনের পথে এগিয়ে যেতে হবে দলকে। সেকথা মাথায় রেখে এখন থেকেই উঠেপড়ে লাগতে চান রাজ্য বিজেপির নেতারা। সেই কারণে, অমিত শাহের কর্মসূচিকে তাঁরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। যদিও, শাহর কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে, সেই কর্মসূচি দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও রাখার কথা ভাবা হয়েছে বলেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ জানিয়েছেন।
Read story in English