তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা ও তাঁর বোনের বিরুদ্ধে শুল্ক দফতরের পাঠানো সমন বুধবার খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। রুজিরাকে পাঠান শুল্ক দফতরের নোটিসে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল, এই মর্মে সমন খারিজ করে আদালত।এর আগে কলকাতা হাইকোর্টে এই সমন বাতিলের আবেদন করেন রুজিরা নারুলা।
সমন খারিজ প্রসঙ্গে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ লক্ষ করেন যে শুল্ক আইনের নির্দিষ্ট পরিসর রয়েছে। তার বাইরে গিয়ে এই আইন প্রয়োগ করা যায় না। কলকাতা বিমানবন্দরের এয়ার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার এই সমন জারি করেছেন। কিন্তু তিনি এক্ষেত্রে তদন্তকারী অফিসার নন। যাদের ডেকে পাঠান হচ্ছে (রুজিরা নারুলা এবং মেনকা গম্ভীর) তাঁদের উপস্থিতির বিষয়ে কোনও অভিমতও গঠন করেননি তিনি। আবার বিমানবন্দর প্রশাসনের আরেক অতিরিক্ত শুল্ক কমিশনারের কাছে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে এই দুই মহিলাকে।
আদালত এও বলে যে “এই একটি ঘটনার দুটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এবং পরস্পরবিরোধী সংস্করণ রয়েছে।” সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে রিট পিটিশনারদের দ্বারা শুল্ক আইন লঙ্ঘনের ফলে, এমতাবস্থায় শুল্ক আধিকারিকদের পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে তদন্ত করার, এমনটাই জানায় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু শুল্ক আইনে ‘কাস্টমস এয়ারপোর্ট’ হিসেবে যে নিয়ম আছে সেই নিয়ম বহির্ভূত কোনও কাজ করা যাবে না।
গত বছর ১৬ মার্চ ভোরবেলা কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন থাইল্যান্ডের নাগরিক রুজিরা নারুলা ও তাঁর বোন মেনকা। অভিযোগ সেই সময় শুল্ক দফতরের অফিসারেরা অভিবাসন কাউন্টারে তাঁদের মালপত্র তল্লাশি করতে শুরু করতে। এরপর নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন রুজিরা। অভিযোগপত্রে তিনি জানান শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা ইচ্ছাকৃতভাবে হয়রানি এবং দুর্ব্যবহার করেছেন।
যদিও শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের তরফে বিমানবন্দর থানায় পাল্টা অভিযোগ জানিয়ে বলা হয় যে নারুলা এবং মেনকা গম্ভীরের মালপত্র পরীক্ষা করতে দিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয় যে তাঁদের ইচ্ছাকৃতভাবেই বাধা দিয়েছে অভিষেক-পত্নী এবং তাঁর বোন। শুল্ক আইন প্রদত্ত ক্ষমতার ভিত্তিতে শুল্ক আধিকারিকদের তাঁদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে বাঁধা দিয়েছে পুলিশ এবং বেশ কিছু অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিও।
মার্চ মাসে বিমানবন্দর থানায় শুল্ক আধিকারিকদের দায়ের করা অভিযোগের বিরুদ্ধে রুজিরা এবং মেনকা গম্ভীর সমন বাতিল করতে এবং শুল্ক আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শুল্ক আইনে যে বিধান রয়েছে তার ভিত্তিত তদন্ত শুরু করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন