কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ছয় তলা থেকে ঝাঁপ মেরে মৃত্যু হল এক রোগীর। বুধবার সকাল দশটা পঁয়তাল্লিশ মিনিট নাগাদ রাউন্ডে এসেছিলেন চিকিৎসকরা। এমন সময়ই জানলার কাছে দৌঁড়ে গিয়ে ঝাঁপ দেয় রোগী রিয়াজউদ্দিন মন্ডল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে।
বছর কুড়ির রিয়াজউদ্দিন বেশ কয়েক মাস যাবৎ মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। মঙ্গলবার নব নির্মিত সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিং এর নিউরো মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার সকালে সাড়ে দশ টা নাগাদ ওয়ার্ডে চিকিৎসকেরা ভিজিটে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরই রিয়াজউদ্দিন আচমকা শয্যা ছেড়ে উঠে পড়েন এবং হঠাৎ ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীদের উপস্থিতিতেই ছুটে যান জানলার কাছে। সেখানে গিয়ে দ্রুত জানালার লক খুলে সকলের সামনেই ঝাঁপ দেন তিনি। মেডিক্যাল কলেজের পাঁচ নম্বর গেটের কাছে নব নির্মিত বিল্ডিং-এ ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। সে সময় বিল্ডিং পিছনের অংশ জনমানবহীন ছিল। উপর থেকে স্বাস্থ্য কর্মীরা নীচের কর্মীদের খবর দেন। তাঁরা ঘটনা স্থলে গিয়ে রিয়াজউদ্দিনকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। এরপরই দ্রুত শুরু হয় অস্ত্রপ্রচার, কিন্তু টেবিলেই মৃত্যু হয় যুবকের।
এই জায়গায় ঝাঁপ দেন ওই রোগী
হাসাপাতালের কর্মীদের সূত্রে খবর, "যখন ডাক্তার রাউন্ডে এসেছিল, তখনই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন ওই রোগী। কেউ কিছু বোঝার আগেই তিনি পৌঁছে যান জানলার কাছে"। মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "এই বিল্ডিং প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনার আওতায়। এখানে বিল্ডিং তৈরির পরিকল্পনায় জানলায় কোনো গ্রিল থাকে না। পুরোটাই কাঁচের। কেবল একটা দিকেই জানলা রয়েছে এবং তাও কাঁচের। আমরা অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম যে এই ব্যবস্থা রোগীদের জন্য বিপদজনক। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এরই মাঝে ঘটে গেল এমন ঘটনা। এখন আমরা গ্রিল লাগানোর জন্য পিডাব্লুডি-কে জানিয়েছি। কিন্তু এখন এসব ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা থাকে। সে সব উতরে গেলে গ্রিল লাগানোর ভাবনাচিন্তা করা হবে। আমি ইতিমধ্যে ডিপার্টমেন্টাল এনকোয়ারি কমিটি তৈরি করেছি। এছাড়া বউবাজার পুলিশ তাদের ফরেন্সিক টিম নিয়েও এসেছে"। কিন্তু কী ভাবে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীদের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।