নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যেন কোনও তাপ-উত্তাপই নেই। শনিবার বিকেল তিনটেয় রবীন্দ্র সরোবরে গিয়ে দেখা গেল, ছুটপুজোর আয়োজনে কোনও খামতি নেই। বরং অন্য বছরের মতোই জাঁকজমক করেই চলছে ছটের আয়োজন। ছোট মালবাহী গাড়িতে মানুষজন বাদ্য সহকারে আসছে উৎসবে অংশ নিতে। সঙ্গে রয়েছে তাসা পার্টি, সাউন্ড বক্স। যদিও সরোবরের বাইরের রাস্তায় এসব রেখেই অনেকে ভিতরে প্রবেশ করছেন। তবে রাস্তায় তাসা পার্টির বাজনা বাজছে। সময় গড়াতে বেড়েছে মানুষের ঢলও। অথচ সরোবরের গেটে নীল রঙের বোর্ডে জ্বল জ্বল করছে ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইবুনালের নির্দেশিকা। কিন্তু, সেদিকে যেন কেউ তাকাচ্ছেই না!
রবীন্দ্র সরোবরের গেটেই লেখা রয়েছে ন্য়াশনাল গ্রীণ ট্রাইবুনালের সেই নির্দেশিকা। ছবি- শশী ঘোষ
সরোবরের ঘাটের পাশে সারি সারি কলার কাঁদি নিয়ে চলছে পুজোর আয়োজন। কলার কাঁদি কাঁধে করে সকলেই ঢুকছে সরোবরে। উল্লেখ্য, ছট পুজোর আয়োজন নিয়ে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুন্যাল বা জাতীয় পরিবেশ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে রবীন্দ্র সরোবরে। শেষমেশ শনিবার সাতসকালে সরোবরের গেটের তালা ভেঙে দেয় একদল। তা নিয়ে হইচই হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তারপর দিনভর ধরেই চলল পুজো-পার্বন।
গতকয়েক বছর ধরেই রবীন্দ্র সরোবরে ছটের আয়োজনের ফলে দূষণ নিয়ে পরিবেশবিদরা সরব হয়েছেন। জাতীয় পরিবেশ আদালত রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজোর আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তা সত্বেও বহু বিতর্কের পর গতবছর সেখানে ছটের আয়োজন হয়েছিল। এবার অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিল রাজ্য সরকার। বিকল্প হিসাবে দক্ষিণ কলকাতায় সরকারি উদ্যোগে একাধিক ঘাটও তৈরি করা হয়। তবে সেই উদ্যোগই যে সার হল একথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ছট উৎসবে মাতোয়ারা তন্বীরা। ছবি- শশী ঘোষ
বিকেল হয়েছে, মানুষের সমাগমও বেড়েছে সরোবরে। এদিন রবীন্দ্র সরোবরে পুজো দিতে এসে কুঁদঘাটের বাসিন্দা প্রতাপ কুমার সিং, দীপক সাউরা বলেন, "আমরা স্থানীয় বাসিন্দা। তাছাড়া সারাবছর ধরে পুজো চলছে না। বছরে তো একটা দিন।" সরোবরে পুজোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কি নেই, তা নিয়ে মাথা ঘামাতেই রাজি নয় এখানে হাজির মানুষজন। অন্যান্য বছরের মতো এবারও দিব্যি চলল ছট পুজো।
যদিও রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজোর আয়োজনের বিরোধিতা করেছে রাষ্ট্রীয় বিহারি সমাজ। এই সংগঠনের প্রধান মণিপ্রসাদ সিং বলেন, "রাজ্য সরকার একাধিক ঘাট তৈরি করে দিয়েছে শুধু ছট পুজোর জন্য। ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইবুনালের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে রবীন্দ্র সরোবরে ছট পুজো নিয়ে। আমরা আদালতের নির্দেশ মেনে নিয়েছি। যাঁরা সেখানে গিয়েছেন, তাঁদের আমরা সমর্থন করছি না।"