মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই কোয়ারেন্টাইনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে রাজারহাটে। কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের রাজারহাটের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে। রবি ও সোমবার মিলিয়ে প্রায় একশ জনকে কোয়ারেন্টাইন-এ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবারও বেশ কয়েকজন এসেছেন এই কেন্দ্রে।
শনিবারই মুখ্য়মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র চালু করার বিষয়ে। সেদিনই একেবারে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে রাজারহাটের ওই ভবনের চতুর্থ তলটি প্রস্তুত করা হয়। এমনকী ঘোষণার দিন সন্ধ্যা থেকেই চালু হয়ে গিয়েছিল রোগী ভর্তি। মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের ওই ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় দ্রুত গতিতে পিচের প্রলেপ দেওয়ার কাজ চলছে। যাতে ওই রাস্তায় গাড়ি যাতায়াতেও কোনও অসুবিধা না হয়। এদিনও অনেকে কোয়ারেন্টাইন করার জন্য আসেন এখানে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনেই প্রস্তুত করা হয়েছে এই আধুনিক কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রের।
কী ব্যবস্থা করা হয়েছে রাজ্যের এই কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে?
এই মুহূর্তে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের রাজারহাটের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীও। নির্দেশ অনুযায়ী দমদম বিমানবন্দর থেকে এখানে নিয়ে আসা হচ্ছে বিদেশ ফেরৎ যাত্রীদের। ভিতরে প্রবেশের আগে নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরপর ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক, হাসপাতালের কর্মী ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী ছাড়া হাসপাতালে অন্যদের প্রবেশ নিষেধ। এমনকী প্রয়োজনে তাঁদের পরিচয়পত্রও দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, এখনো পর্যন্ত তিনশ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে এখানে।
জানা গিয়েছে, এই ক্যাম্পাসের চতুর্থ তলটিও প্রস্তুত রয়েছে কোয়ারেন্টাইনের জন্য। দুটি শয্যার মধ্যে ব্যবধান রাখা হয়েছে এক মিটারের বেশি। প্রয়োজনে ভবনটির অন্যান্য তলাও ব্যবহার করা হতে পারে। দ্রুত আরও কিছু শয্যা প্রস্তুত করার কাজ চলছে। ২৪ ঘণ্টার জন্য আরএমও এবং নার্সরা রয়েছেন এখানে। এছাড়া আছেন স্বাস্থ্য কর্মী ও মেডিক্য়াল টেকনিশিয়ানরা। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট-এর যে সব কর্মীরা (টেকনিশিয়ান, ইঞ্জিনিয়ার ও স্বাস্থ্যকর্মী) ছিলেন, তাঁদেরও এখানে কাজে লাগানো হচ্ছে।
চতুর্থ তলার শয্যাগুলি ইতিমধ্যে ব্য়বহার হচ্ছে। আপাতত সেখানেই ভর্তি চলছে। দমদম বিমানবন্দর থেকে আসা যাত্রীদের সেখানে কোয়ারেন্টাইনের জন্য রাখা হচ্ছে। পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়। যাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে তাঁদের টিফিন, দুপুর ও রাতের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মিনারেল ওয়াটারও সরবরাহ করা হচ্ছে। কোয়ারেন্টাইনে রাখা মানুষজনের সংখ্যা বেড়ে গেলে, তৃতীয় তল ব্যবহার করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।