Advertisment

'দিদি'র দুয়ারে মালদার সায়ন্তিকা, মমতা পেলেন আমসত্ত্ব-আম গাছ, স্বপ্নপূরণ খুদের

প্রাণভরে কথাও হল অনেক্ষণ। চলে উপহার বিনিময়ও।

author-image
Rajit Das
New Update
CM Mamata Banerjee called Maldas Sayantika Das to her house and talked to her

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সায়ন্তিকা দাস।

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ধন্যবাদ জানাবে। জেদ ধরেছিল ইংরেজবাজারের খুদে সায়ন্তিকা। সব শুনে 'দিদি'ও আগ্রহী ছিলেন দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ার সঙ্গে দেখা করবেন বলে। অবশেষ স্বপ্ন পূর্ণ হল ইংরেজবাজারের মনস্কামনাপল্লী এলাকার সায়ন্তিকা দাসের। বৃহস্পতিবার কালীঘাটে সাইকেল চালিয়ে গেল সে। দেখা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। প্রাণভরে কথাও হল অনেক্ষণ। চলে উপহার বিনিময়ও।

Advertisment

সবটাই যেন স্বপ্নের যাত্রা বলে মনে করছেন ইংরেজবাজারের খুদে মেয়েটি। আর মমতাদির বাড়ি ঘুরে সায়ন্তিকার বাবা, মায়ের ঘোর যেন কাটতেই চাইছে না। সায়ন্তিকার বাবা পেশায় গাড়ি চালক। মা গৃহবধূ। তাঁরাও আজ মেয়ের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন।

দুই দিদির স্বপ্ন সফলের হাতিয়ার কন্যাশ্রী প্রকল্প। দ্বিতীয় শ্রেণির সায়ন্তিকা দাসও রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের জন্যই নির্ভয়ে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সামান্য হলেও হাল ফিরছে পরিবারের। তাই মমতা দিদির কাছে কৃতজ্ঞ ইংরেজবাজারের মনস্কামনাপল্লী এলাকার এই খুদে। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে সাইকেলে সুদূর মালদা থেকে কালীঘাটে আসার জেদ ধরেছিল সায়ন্তিকা। পুরটাই জেলাশাসক মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জানান। তারপরই নবান্নের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

মুখ্যমন্ত্রীর হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সায়ন্তিকার বাবা প্রদীপ দাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'মমতাদি যে কেন সকলের প্রিয় ও মাননীয়া তা আজ বুঝতে পারলাম। আমরা আপ্লুত। মেয়ের সঙ্গে আমাদেরও স্বপ্নপূরণ হয়ে গেল। ঘোর কাটছে না যেন। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের মত মানুষদের সঙ্গে দেখা করছে, এটাই তো আমার কাছে জীবনের অন্যতম বড় পাওনা।'

কী করে হলে অসাধ্য সাধন? প্রদীপবাবুর কথায়, 'মেয়ের দাবি মালদার জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রকে জানিয়েছিলাম। এসডিপিও এবং ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যানকেও জানানো হয়েছিল। জেলাশাসকই অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন। যোগাযোগ করেন সিএমও-তে। সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী সায়ন্তিকাকে সাইকেলে করে কলকাতায় আসতে নিষেধ করেন। রীতিমত ধমকে দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন আমি ওর সঙ্গে ২৬ তারিখই দেখা করব। সেটাই হল।'

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মত ও প্রশানের তত্ত্বাবধানে বুধবার রাতে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে চড়ে সায়ন্তিকা ও তাঁর বাবা, মা। সঙ্গে ছিল সাইকেল। ভোরে কলকাতায় নামেন তাঁরা। এরপর সার্কিট হাউসে বিশ্রাম নেন। সকাল ১০টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার সার্কিট হাউস থেকেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তায় সাইকেলে চড়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে উপস্থিত হন সায়ন্তিকা। আপ্যায়ণের প্রথমস্তরে ভরপেট খাওয়াদাওয়া চলে। তারপরই স্বপ্ন সফল হওয়া। নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে খুদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন ‘কন্যাশ্রী’তেই স্বপ্নপূরণ, ‘দিদি’কে কৃতজ্ঞতা জানাতে সাইকেলে মালদা থেকে কলকাতার পথে ৮ বছরের কন্যা

এরপর কী হল? সায়ন্তিকার বাবা প্রদীপবাবু বলেন, 'দিদি এসেই আমার মেয়েকে জড়িয়ে ধরেন। ওনার থাকার ঘর, অফিস, বাড়ির চারপাশ ঘুরিয়ে দেখান। এরপর মেয়ের সঙ্গে গল্প শুরু করেন। একফাঁকে মেয়ে দিদির জন্য মালদা থেকে আনা আমসত্ত্ব ও আম গাছ ওনাকে দেয়। তিনি তা গ্রহণ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আম গাছটি বাড়ির পাশেই পুঁতে দিতে নির্দেশ দেন। দিদিও আমার মেয়েকে তাঁরই লেখা কবিতার বই কবিতাবিতান দিয়েছেন। সেখানে সায়ন্তিকার নাম লিখে সই করে দিয়েছেন। আমার মেয়ে উনি জিজ্ঞাসা করেন সে বড় হয়ে কী হতে চায়? মেয়ে বলে আইএস অফিসার। শুনে দিদি বলেছেন, কোনও অসুবিধা হবে না। যেকোনও প্রয়োজনে তুমি আমাকে পাশে পাবে। তুমি শুধু নিশ্চিন্তে পড়াশুনো কর।' মেয়েকে ভালো করে পড়ানোর জন্য প্রদীপবাবুকেও পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।

মুখ্যমন্ত্রীর দেখা পেয়ে আপ্লুত খুদে সায়ন্তিকা। অন্য ঘোরে প্রদীপ দাস ও তাঁর স্ত্রী। কালীঘাট ঘুরে জীবনের অন্যতম বড় পাওয়া পূরণ হল তাঁদের। এ দিনই দুপুরে গাড়িতে চড়ে কলকাতা থেকে মালদার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ইংরেজবাজারের দাস পরিবার।

Maldah West Bengal Mamata Banerjee kanyasree Malda
Advertisment