শীঘ্রই করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের আপৎকালীন চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করতে চলেছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, এ জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের রাজারহাটের সেকেন্ড ক্যাম্পাসটি নিতে চাইছে রাজ্য। এই ভবনটি নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারই জমি দিয়েছিল। এখনও চালু না হলেও নয় তলা ভবনের ৩০০ বেডের এই হাসাপাতালের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। তাই এখানেই আপাতত 'কোয়ারান্টাইন' কেন্দ্র তৈরি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার রাজারহাটে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইন্সটিটিউটের নবনির্মিত হাসাপাতালটি নিচ্ছে। সেখানে আধুনিক মানের চিকিৎসা কেন্দ্র করা হবে করোনা আক্রান্তদের জন্য। নবেল করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা কিংবা এই ভয়ের পর্ব মিটে গেলে ভবনটি আবার ফিরিয়ে দেয়া হবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হাতে। তবে এখনও পর্যন্ত রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতর এ বিষয়ে কিছু জানে না বলেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডা. দেবাশিষ ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন: আপনি করোনা আক্রান্ত কিনা কীভাবে বুঝবেন? উপসর্গ মিললে কোথায় যাবেন?
ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তদের জন্য। সৌদি আরব থেকে আসা মুর্শিদাবাদের এক যুবকের মৃত্যুর পর আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। যদিও পরে জানা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ মেনে তড়িঘড়ি বহরমপুরের পুরনো মাতৃসদন হাসপাতালে মুর্শিদাবাদ জেলায় স্বাস্থ্য দফতর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেসন ওয়ার্ড চালু করেছে।
হুগলি, বর্ধমান, জলপাইগুড়ি-সহ জেলার হাসপাতালগুলিতেও আইসোলেসন ওয়ার্ড চালু রাখা হয়েছে। এদিন বনগাঁয় করোনা সন্দেহে এক বৃদ্ধ ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁকে কলকাতায় আনতে কোনও অ্যাম্বুলেন্স রাজি হচ্ছিল না। দিনের শেষে সেই সমস্যা মিটে যায়। হুগলি জেলা স্বাস্থ্য অধিকর্তা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, শ্রীরামপুর ওয়ালস, আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে। কোনও রোগীকে কলকাতায় পাঠাতে হলে গাড়ির ব্য়বস্থাও রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা কাঁপুনি: সোমবার থেকে বন্ধ বাংলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বর্ধমান, কাটোয়া, কালনা, হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে পূর্ব বর্ধমানের কালনা ও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও খোলা হয়েছে বিশেষ আইসোলেশন ওয়ার্ড। করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হবে বলে জানিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে দশটি করে শয্যা রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও হাসপাতালগুলিতে পাঠানো হচ্ছে। কেউ আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সেখানে রেখে চিকিৎসা করা যাবে। কোন হাসপাতালে, কোন চিকিৎসক আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা করবেন সেই তালিকাও তৈরি করা হয়েছে।’