দোকান-বাজার বন্ধ নিয়ে যাঁরা গুজব রটাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা। ‘গুজব রটালে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে’, বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকে এমন নির্দেশই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা সত্বেও সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও হেলদোল নেই। বরং করোনা আতঙ্কে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মানুষজন খাদ্য-দ্রব্য সংগ্রহ করতে দোকানে দোকানে ভিড় করছেন। কোথাও আবার দীর্ঘ লাইনও পড়ে যাচ্ছে। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরাও মজুত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
করোনা ত্রাসে বিশ্বের নানা দেশে ইতিমধ্যে লকডাউন চলছে। শুক্রবার মুম্বইয়ে লকডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যে দেশের অনেক শহরের মানুষজন বাইরে বেরনো বন্ধ করে দিয়েছে। কলকাতায় দুজন লন্ডন ফেরত যুবকের করোনা ভাইরাস ধরা পড়ায় এ রাজ্যেও আতঙ্ক বেড়েছে কয়েকগুন। তাই ঘরে খাদ্যদ্রব্য মজুত করতে শপিং মল-সহ মুদিখানার দোকানে ভিড় জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর এরই ফাঁকে কালোবাজারিও শুরু হয়ে গিয়েছে দেদার।
শিয়ালদার কোলে মার্কেটে সবজি কোনা-কাটা চলছে। ছবি- শশী ঘোষ
রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, "খাবার মজুত করে রাখতে হবে, এসব ভাবার কোনও যুক্তি নেই। সংকটের কোনও কারণ নেই। মানুষকে বোঝানো হবে। তবে কিছু কিছু ব্যবসায়ী এর ফলে ফায়দা তুলছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী তো মজুতদারীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছেন।"
এদিকে, মহানগরের বাসে, ট্রামে যাত্রী সংখ্যা নিত্য কমছে। ট্রেনেও প্রায় একই দৃশ্য। তুলনামূলকভাবে রাস্তা-ঘাট অনেকটা ফাঁকা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সব রকম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ রয়েছে। অনেক সংস্থাই 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' কার্যকরী করেছে। বাড়ি থেকে বেরতেই আতঙ্কিত নগরবাসী। অনেকেই নিজেকে গৃহবন্দী করে রাখতে চাইছেন। আতঙ্কের আবহে শহরবাসীর একাংশ ঘরেই মজুত রাখতে চাইছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।
করোনা আতঙ্কে মাস্ক ও স্যানিটাইজারও বাজার থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। হন্যে হয়ে শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত খুঁজেও অসুধের দোকানে একটা মাস্ক মিলছে না। সরকারিভাবে মাস্ক বা স্যানিটাইজারের কোনও সুরাহাও হয়নি এখনও। শিয়ালদায় মুদির ফর্দ নিয়ে হাজির অনির্বান রায়। তাঁর সোজা-সাপ্টা বক্তব্য, "লকডাউন ঘোষণা হলে কী না খেয়ে থাকব? তাই বেশী করে খাবার কিনে রাখছি।"