পশ্চিমবঙ্গে এখন পর্যন্ত যে দুজন নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে, তাঁরা দুজনেই কলকাতার বাসিন্দা, দুজনেই লন্ডন ফেরত। প্রথমজনের হদিস মেলে গত মঙ্গলবার। টালিগঞ্জের বাসিন্দা ১৮ বছরের ওই তরুণ বর্তমানে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর মা রাজ্য সরকারের এক উচ্চপদস্থ আমলা। হাসাপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। তাঁর পরিবারের অন্য যাঁরা কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তাঁদের শরীরেও মারণ ভাইরাসের জীবাণু নেই।
শহরের দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত বছর বাইশের এক তরুণ, বালিগঞ্জের পন্ডিতিয়া রোডে এক আবাসনের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে তিনিও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। গত ১৩ মার্চ লন্ডন থেকে কলকাতায় ফেরেন তিনি। এরপর থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত ছিলেন হোম কোয়ারেন্টাইনে, অন্তত প্রাথমিকভাবে তাই বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বাজারে করোনা, নিমেষে শেষ বস্তা বস্তা খাদ্যদ্রব্য
তবে দুজনের ক্ষেত্রেই জানা গিয়েছে যে, উপেক্ষিত হয়েছে করোনার আবহে জারি করা কিছু মৌলিক স্বাস্থ্যের নিয়ম, শহরের বেশ কিছু জায়গায় 'হোম কোয়ারেন্টাইন'-এর নির্দেশ অমান্য করে ঘুরে বেড়িয়েছেন দুই আক্রান্ত। যার ফলে এই দুজন যে ঠিক কতজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছেন, তা জানার উপায় আপাতত নেই।
এর জেরেই আজ নবান্ন থেকে জারি হয়েছে কড়া বার্তা - বিদেশ থেকে আগত কোনও শহরবাসী যদি স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে না যান, তবে তাঁকে জোর করেই গৃহবন্দী করে রাখা হবে। এই মর্মে নিচের সতর্কবার্তা নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে পোস্ট করেছে কলকাতা পুলিশ:
পোস্টে লেখা রয়েছে: "এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে দু’জন করোনা-আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গেছে। তাঁরা দু’জনেই বিদেশে থাকাকালীন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং কলকাতায় সেই সংক্রমণ বহন করে এনেছেন। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, বিগত কিছুদিনের মধ্যে যাঁরা অন্যান্য দেশ থেকে এ-রাজ্যে এসেছেন, বিশেষ করে ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি থেকে, তাঁরা যেন অবশ্যই বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন 'হোম কোয়ারান্টাইনে', অর্থাৎ গৃহবন্দি অবস্থায় থাকেন। করোনা-প্রতিরোধের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এখন অবশ্যকর্তব্য।
যিনি বা যাঁরা এই নির্দেশ অমান্য করবেন, তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার। প্রয়োজনে ' ওয়েস্ট বেঙ্গল এপিডেমিক ডিজিজ কোভিড১৯ রেগুলেশন ২০২০’ অনুসারে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের বলপূর্বক 'কোয়ারান্টাইন' অর্থাৎ গৃহবন্দি থাকতেও বাধ্য করা হবে।"