ভোটের মুখে গতকালই কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। তার জায়গায় পাঁচ বছর পর ফের নগরপাল হচ্ছেন সৌমেন মিত্র। বলা যায়, পাঁচ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে লালবাজারে ফিরছেন সৌমেন মিত্র। এবার সরানো হল বারাকপুর ও বিধাননগরের সিপিকেও। সরানো হল মুকেশ ও মনোজ ভার্মাকে। সরানো হয়েছে হাওড়ার কমিশনারকেও। কুণাল আগরওয়ালকে পাঠানো হয়েছে মেদিনীপুর রেঞ্জের ডিআইজি পদে।
বিধাননগর সিটি পুলিশের কমিশনার পদ থেকে সরানো হল মুকেশকে। তাঁকে বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি পদে পাঠানো হয়েছে। তাঁর জায়গায় এলেন কলকাতার অতিরিক্ত কমিশনার সুপ্রতীম সরকার। বারাকপুরের সিপি মনোজ কুমার ভার্মাকে পাঠানো হল কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্সের আইজি পদে। তাঁর জায়গায় এলেন সিআইএফের এডিজি অজয় কুমার নন্দ। ডায়মন্ড হারবার কাণ্ডে কেন্দ্রের রোষানলে পড়া আইপিএস তথা প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠীকে প্রভিশনিং বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভোটের মুখে গত কয়েকদিনে আইপিএস-স্তরে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রদবদল হয়েছে। বীরভূম, পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারকে সরানো হয়। তাঁর পরিবর্তে এই পদে আসেন কলকাতার ডিসি (সেন্ট্রাল) মীরাজ খালিদ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার ছিলেন এস সেলভামুরুগান। তাঁর বদলে নিয়ে আসা হয় বিশ্বজিৎ মাহাতোকে। সেলভামুরুগানকে সিআইডিতে বদলি করা হয়। সরানো হয়েছে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীরকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় গৌরব শর্মাকে। পরে অবশ্য চাকরি থেকে ইস্তফা দেন হুমায়ুন কবীর।
অনুজ শর্মা, জ্ঞানবন্ত সিংরা মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের অফিসার বলে ওয়াকিবহাল মহল সূত্রের খবর। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদি তাঁদের ভোটের মুখে বদলি নিয়ে হস্তক্ষেপ করে তাহলে আগামী তিন বছরের মধ্যে তাঁদের পুনর্বহাল করা যাবে না। সেটা মাথায় রয়েছে নবান্নের। এদিকে, গত লোকসভা নির্বাচনের পর একাধিক বার অশান্ত হয়েছে বারাকপুর শিল্পাঞ্চল। মূলত ভাটপাড়া এলাকায় কাশ্মীরের মতো রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ আনতে মাওবাদী স্পেশ্যালিস্ট মনোজ ভার্মাকে বারাকপুরে সিপি করে পাঠানো হয়।
তারপর থেকে একাধিক বার শাসকদলকে তোষামোদ করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সাংসদ অর্জুন সিং বহুবার অভিযোগ করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে। ভোটের আগে তাঁকেও নির্বাচন কমিশন বদলি করতে পারে বলে সূত্রের খবর। তাই অস্বস্তি এড়াতে তাঁর জায়গায় অজয় কুমার নন্দকে আনল নবান্ন।