বঁটিতে গলা কাটা শিশুর জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য পেলেন এসএসকেএম হাসপাতালের ডাক্তারেরা। সুদূর মুর্শিদাবাদ থেকে গলা কাটা শিশুটিকে নিয়ে বাবা-মা ছুটে আসেন কলকাতায়। শিশিটিকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। দীর্ঘ সময়ের জটিল অস্ত্রোপচারের পর শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, শিশুটিকে যখন নিয়ে আসা হয় তখন মায়ের কোলে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল সে, রক্তে ভেসে যাচ্ছিল চারিদিক।
অসুস্থ শিশুটির নাম আজিদ উল রহমান। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, খেলতে খেলতে বঁটির ওপর পড়ে যায় সে এবং বেকায়দায় কোপ পড়ে যায় গলায়। গলার পিছনে মাথার নীচের অংশ গভীর ক্ষতও হয়। এসএসকেএম হাসপাতালের ডাক্তার মহাপাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "ব্রেনে যে ধমনী রক্ত সঞ্চলন করে তা কেটে যায়। ক্ষতস্থান এতটাই গভীর যে প্রায় সুষুম্নাকান্ড অবধি পৌঁছে গেছে"।
আরও পড়ুন: উধাও ফোর্থ স্টেজের ক্যান্সার, নজির গড়ল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ
উল্লেখ্য, এসএসকেএম-এ ভর্তির সাত দিন আগে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রথমে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করলে প্রাথমিক অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় না। এর সাত দিন পরে ফের রক্তপাত শুরু হয়। তারপরই শিশুটির বাবা-মা তাকে ওই অবস্থায় কলকাতা শহরে নিয়ে আসে।
ডাক্তার মহাপাত্র বলেন, "আমরা যখন শিশুটিকে অপরেশন বেডে নিয়ে যাই। তখন ফিনকি দিয়ে রক্তপাত হচ্ছিল। এরপর ক্ষতস্থান খুলে দেখা হয়। সাংঘাতিক রক্তপাত হয় সেসময়। মাত্র পাঁচ বছরের শিশুর এরকম রক্তপাত দেখে, বাঁচানো যাবে কিনা সেই চিন্তায় পড়ে যাই আমরা। বঁটির মারাত্মক কোপে ডান দিকের ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারি (ধমনী) ছিঁড়ে গিয়েছিল। এই ধমনীর সঙ্গে যুক্ত থাকে ব্রেন। এটি দিয়েই ব্রেনে রক্ত সঞ্চালন হয়। এই ধমনী ছিঁড়ে যাওয়ার পর সাধারণত স্ট্রোক হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তবে শিশুটির তা হয়নি। অ্যানাসথেসিয়া করে ধমনী চেপে রেখে ডাঃ সেনগুপ্ত এর সহায়তায় তিন ঘণ্টার অস্ত্রপচার করা হয়। সফল অস্ত্রোপচারের পর পরীক্ষা করে দেখা হয় ধমনী দিয়ে রক্ত সঞ্চালন করছে। খুলির নিচের অংশে অস্ত্রোপচার করা হয়"। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বর্তমানে শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল।