পুত্রসম ছাত্রের হাতে চূড়ান্ত নিগৃহীত। অপমানের জ্বালায় আর উপাচার্যের পদে থাকতে চান না মহম্মদ আলি। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমবার জানান, তিনি দায়িত্ব ছাড়তে চান। বহিষ্কৃত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল এবং তাঁর সঙ্গীদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার পর আর আলিয়াতে থাকতেই চাইছেন না মহম্মদ আলি। সোমবার কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।
কী বলেছেন মহম্মদ আলি?
তিনি বলেছেন, "আমি সম্মানিত বা সুরক্ষিত কোনওটাই আর অনুভব করছি না। আমার পুরনো জায়গা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরতে চাই। আমি যাদবপুরের ভিসি সুরঞ্জন দাসকে এই মর্মে চিঠিও দিয়েছি। আমার মনে হয়, আমি শিক্ষক হিসাবে ব্যর্থ হয়েছি।" বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন তিনি।
এদিকে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায় এবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন থেকে সাংবাদক সম্মেলনে তিনি বলেন, “আলিয়ার একটা অংশের ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে। তারা সবাই ভাল। তবে কয়েকজন আছে, তাঁদের ক্ষোভ রয়েছে। যে একটু কটু, খারাপ কথা বলেছে, তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমাদের এখানে পুলিশ অ্যাকশন নেয়।”
এদিন আলিয়া কাণ্ডে প্রশ্ন শুনে বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। বিরক্তি প্রকাশ করে মমতা বলেন, “আপনার কি এটা খুব গুরূত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে? পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে।” যদিও বিরোধীদের দাবি, পুলিশ মোটেও সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়নি। উপাচার্যকে নিগ্রহের ৪৮ ঘণ্টা পর গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত গিয়াসউদ্দিনকে। তাঁর গ্রেফতার হওয়ার পর শাসকদলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি গিয়াসউদ্দিনকে নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলে। তৃণমূল দাবি তোলে, অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে।
এদিন আলিয়া কাণ্ডে পাল্টা বিশ্বভারতীর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “ওখানে ভিসি যা করছেন তাতে কি উনি গ্রেফতার হয়েছেন? বিশ্বভারতীতে যা করছেন ভদ্রলোক! আমি ভদ্রলোকই বলব, কারণ আমার মুখ থেকে খারাপ কথা বের করব না। দেখুন গিয়ে ওখানে কী হচ্ছে!”
প্রসঙ্গত, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরে ঢুকে তাঁকে চড় মারার হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল। যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, তিনি আগে ছিলেন সংগঠনে। এখন কোনও সদস্য নন। উপাচার্যের ঘরে ঢুকে রীতিমতো মারধর, গালিগালাজ করেছিলেন ওই ছাত্র নেতা। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই রাজ্যের শিক্ষামহলে শোরগোল পড়ে যায়। সর্বত্র নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। রবিবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে টেকনো থানার পুলিশ।