টালা ব্রিজের বেহাল অবস্থার জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে কলকাতার উত্তর প্রান্তের বাস চলাচল। যানজটের গুঁতোয় নিত্যদিনের যাতায়াতে প্রাণ ওষ্ঠাগত উত্তর কলকাতার বাসিন্দাদের। টালা ব্রিজে বাস চলাচল নিষেধ। সে কারণে চিড়িয়ামোড় থেকে বাসগুলিকে দমদম রোডে তোলা হচ্ছে। কিছু বাস পাইকপাড়া ও কিছু বাসকে নাগের বাজার ঘুরে লেকটাউন বেলগাছিয়া হয়ে শ্যামবাজারের রুট দিয়েছে ট্রাফিক কন্ট্রোল। আর এই দমদম রোডেই শুক্রবার আয়োজন করা হচ্ছে কালীপুজো কার্নিভাল। যানজট নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের মনে উঠছে প্রশ্ন। সন্ধে ছটা থেকে কার্নিভাল শুরু হওয়ার কথা। সুতরাং, অফিস টাইমেই চলবে কার্নিভাল।
প্রসঙ্গত, বিটি রোড ধরে চলাচল করা শ্যামবাজারগামী ৫০টি রুটের বাসকে চিড়িয়ামোড় থেকে দমদম রোডে ঘুরিয়ে দেওয়া শুরু হতেই মন্থর হয়ে গিয়েছে চলাচলের গতি। এদিকে দমদম রোডে প্রচুর পরিমাণে অটো ও রিকশা চলে। সেই সঙ্গে রাস্তার ধারে বসে অনেক অস্থায়ী বাজার। ফলে, অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকলে লম্বা জ্যাম হয় দমদম রোডে। সাধারণত অফিস টাইম অর্থাৎ সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধে আটটা-নটা পর্যন্ত গাড়ির চাপ থাকে। আর এই সময়েই দক্ষিণ দমদমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব সিঁথি অঞ্চল থেকে দমদমরোড ঘুরে গরুহাটা বড়ো কালী মন্দির পর্যন্ত চলবে কালীপুজো কার্নিভ্যালের শোভাযাত্রা।
কার্নিভালের অন্যতম উদ্যোক্তা তথা দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার রাজু সেনশর্মা জানান, 'যানজটের সমস্যা অস্বীকার করতে পারি না। প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, তারা সহাযোগীতা করবে। মানুষকে সমস্যায় ফেলতে চাই না। তাই আমরা যতটা সম্ভব স্বেচ্ছাসেবক রেখে ট্রাফিক পুলিশের সহযোগীতায় যানজট সৃষ্টি যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করছি'।
ব্রাত্য বসুর উদ্যোগে শ্যামা মা এর নিরঞ্জন
প্রত্যেকবছর দশমীর পর কোনো এক নির্দিষ্ট দিনে কলকাতার সেরা দুর্গাপুজোগুলোকে নিয়ে রেড রোর্ডে শোভাযাত্রার আয়োজন করে থাকে রাজ্য সরকার। সেই পথেই কালীপুজো কার্নিভ্যালের প্রয়াস। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার রাজু সেনশর্মা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "১ নভেম্বর, শুক্রবার কালীপুজো কার্নিভেলের আয়োজন করা হয়েছে। চতুর্থ বর্ষে পদর্পন করেছে এই কার্নিভাল। এই কার্নিভালের মূল উদ্যোক্তা আমারা, আর রাজনৈতিক অভিভাবক হলেন দমদমের বিধায়ক অধ্যাপক ব্রাত্য বসু। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই এই কার্নিভালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপনায় আমি আছি।"
এই কার্নিভালের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে আনন্দ দেওয়া। শোভাযাত্রার মধ্যে ঠাকুর ছাড়াও থাকবে পুরুলিয়ার ছৌ-নাচ, রাজস্থানী নৃত্য,পাঞ্জাবি ভাঙরা, ছোট ও বড় রন পা, মানুষ বহুরুপীর আদলে পশু সেজে নৃত্য পরিবেশন করবে। এছাড়া থাকছে আদিবাসী নৃত্য, মহিলাদের কুলো নিয়ে নাচ, ১০১ জন মহিলা ঢাকি, মহিলা ব্যান্ড। অনুষ্ঠানের শুরুতেই থাকছে শঙ্খবাদন। সমাজকে সচেতন করা ও সমাজ গড়ার একাধিক তথ্য থাকবে এই শোভাযাত্রায়। সাড়ে ছটা থেকে শুরু হবে কার্নিফভ্যাল। রাজুবাবু আরও জানিয়েছেন, চন্দননগরের আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠবে শোভাযাত্রা।
কালী পুজো কার্নিভাল শুরু হবে দক্ষিণ দমদমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব সিঁথি অঞ্চল থেকে, আর দমদমরোড ঘুরে গরুহাটা বড়ো কালী মন্দির পর্যন্ত তা চলবে। শোভাযাত্রায় যোগ দেবে সেন্ট্রাল দমদম স্পোর্টিং ইউনিয়ন ক্লাব, দমদম মেলামেশা সংঘ, মধুগড় আমরা সবাই, বাপ্পা রেডিও আমরা সবাই, মুক্তদল, নবারুণ সংঘের মতো পুজোগুলি।
রাজু সেনশর্মা বলেন, শুক্রবার শোভাযাত্রা উদ্বোধন করবেন বার্ত্য বস। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ দমদমের চেয়ারম্যান পাঁচু রায়, দমদমের সাংসদ সৌগত রায়।