দূষণের জের। সরকারি দফতরের কাজে ব্যবহার করা যাবে না ১৫ বছরের বেশি পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি। রাজ্য সরকারি বিভিন্ন দফতরকে সতর্ক করল পরিবহণ দফতর। ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন দফতর ছাড়াও চিঠি পাঠানো হয়েছে পুলিশ ও রাজ্যে পুরসভাগুলির কাছে।
হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল পনেরো বছরের বেশি পুরনো বাণিজ্যিক সব গাড়ি বাতিল করতে হবে। প্রায় দশ বছর আগের সেই নির্দেশ ফের মনে করিয়ে দিতেই পরিবহণ দফতরের এই চিঠি বলে জানিয়েছেন এক সরকারি অফিসার। শুধু কলকাতা নয়। হাইকোর্টের রায় বলবৎ রয়েছে হাওয়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনার ক্ষেত্রেও।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে লাগামছাড়া দূষণ, হস্তক্ষেপ কেন্দ্রের
সূত্রের খবর, হাইকোর্টের রায় কেবল কাতায় কলমেই রয়েছে। কলকাতার শহরে প্রত্যেক দিন গড়ে প্রায় লাখের উপর ১৫ বছরের বেশি বয়সী গাড়ি চলাচল করে থাকে। তবে, দিল্লির অবস্থার প্রেক্ষিতে সজাগ হয়েছে প্রশাসন। কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই শহর থেকে ৮০টি পুরনো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে। নজরদারিতে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতরও। ৪০টি পুরনো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে ওই দফতর। পরিবহণ দফতর বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দফতরকে চিঠি পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের অফিসারদেরও সজাগ করেছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরিবহণ দফতের অফিসাররা যেন কড়া নজরদাররি চালায় শহরে।
আরও পড়ুন: দুঃসহ অভিজ্ঞতা, ভূস্বর্গ থেকে বাংলায় ফিরলেন ১৩৮ জন শ্রমিক
তবে, পরিবহণ দফতরের সতর্কতা ও পদক্ষেপকে 'লোকদেখানো' বলে দাবি করছেন শহরের পরিবেশবিদরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবেশ আন্দোলন কর্মীর কথায়, 'বিষয়টি অনেকটা চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ার মতো। দিল্লির দূষণ দেখে হুঁশ ফিরেছে সরকারের। প্রশ্ন তাহলে ১০ বছরের পুরনো আদালতের রায় কেন কার্যকর করা হল না? পরিবহণ দফতরের এই চিঠি আসলে দায় এড়ানোর চেষ্টা আর কিছু নয়।' উল্লেখ্য, বাযু দূষণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এর আগে জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্য সরকারকে ১০ কোটি টাকা জরিমানা করেছিল।
দূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি। কলকাতাতেও ক্রমশ বাড়ছে দূষণের হার। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দিল্লিতে প্রতিবছর শীতে দূষণের মাত্রা বাড়ে যায়। এর অন্যতম কারণ হিসাবে বলা হয়, সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় কৃষি বর্জ্য পোড়ানো। কলকাতায় সেই অসুবিধা নেই। কিন্তু, হাওড়া সহ পার্শ্ববর্তী শিল্পাঞ্চলের দূষণ মারাত্মক ক্ষতি করছে কলতার পরিবেশ। মত পরিবেশবিদদের। সেক্ষেত্রেও প্রশাসনের নজরদারির গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা।
Read the full story in English