দুর্গা পুজো হবে, প্রথম বড় পুজোর বায়না পেল কুমোরটুলি

বৃহত্তর পুজো অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত মানুষদের উপার্জনের কথাই ভেবেছেন কর্মকর্তারা।

বৃহত্তর পুজো অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত মানুষদের উপার্জনের কথাই ভেবেছেন কর্মকর্তারা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বহু কিছু কেড়েছে করোনা। শুধু কেড়েছে নয়, কেড়ে চলেছে এখনও। কিন্তু এই তালিকাতে কি দূর্গাপুজোও ঢুকবে! করোনার ধাক্কায় কাহিল অর্থনীতি বাঙালির প্রাণের উৎসবের জৌলুস ম্লান করবে নাকি প্রাণটাই কেড়ে নেবে, এই আশঙ্কা যখন জাল বুনছে তখনই আশার কথা শোনাল সন্তোষ মিত্র স্ক্যোয়ার। ‘কী করে হবে পুজো’, দূর্গাপুজো এখন বিলাসিতা', ‘একটা বছর মজা, আনন্দ, উল্লাস থেকে দূরে থাকাই যায়'- লকডাউনে এই ধরনের আলোচনা যখন ডালপালা বিস্তার করছে, তখনই ঠাকুরের বায়না দিয়ে পুজোর ঢাকে কাঠি দিল সন্তোষ মিত্র স্ক্যোয়ার (লেবুতল পার্ক)। কর্মকর্তাদের কথায়, যে সন্তানদের হাতে মা গড়ে ওঠেন, তাদের ক্ষতি হবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক হবে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, বৃহত্তর পুজো অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত মানুষদের উপার্জনের কথাই ভেবেছেন কর্মকর্তারা।

Advertisment

সোমবার শিল্পী মিন্টু পালকে বায়না দিয়েছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সদস্যরা। দুর্গাপুজো হবে না, এই ভাবনা ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই অবসাদে ভুগছেন। যাঁরা ছোট খাঁটো ব্যবসা করেন তারাও আগামী দিনের কথা ভেবে শঙ্কিত হচ্ছেন। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে রুখতে বৈশাখেই কুমোরটুলিতে বায়না দিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। মৃত্শিল্পী মিন্টু পালের কথায়, "কুমোরটুলিতে এটিই এ বছরে কলকাতার প্রথম বড় পুজোর বায়না "। দিন দুয়েক আগেই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে পটুয়াপাড়ার শিল্পীরা জানিয়েছিলেন, ‘’বৈশাখ মাস কেটে গিয়েছে একটিও পুজোর বায়না আসেনি। বৈশাখ মাসেই অনেক অর্ডার চলে আসে। আমরা বুঝে যাই, এ বছর ঠিক কতগুলি প্রতিমা বানাতে হবে। সেখানে একটাও অর্ডার আসেনি”।

গত বছর সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারেক আকর্ষণ ছিল সোনার দুর্গা। মন্ডপের রথ সেজেছিল রুপো দিয়ে। লেবুতলার সোনার পাতে মোড়া দুর্গা প্রতিমা দেখতে ভিড় করেছিল লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী। এ বছরও কি চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া সেই জৌলুসের কথা ভাবছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের কর্মকর্তারা? অন্যতম কর্মকর্তা সজল ঘোষের কথায়, “গতবছর যেটা ১০০ টাকা খরচ ছিল এবছর সেই খরচ ৫০ টাকা করা হবে। তবে, ওই জৌলুস ধরে রাখার চেষ্টা করব। আমার বাজেট কমবে, আমি ডেকরেটর, লেবার এদের রেট কমানোর অনুরোধ করব। অতএব, গতবছরের মতই পুজো করব, কিন্তু সমস্ত খরচ কম থাকবে”।

সজলবাবু আরও বলেন, "আমাকে বাঁচতে গেলে কোভিড নিয়েই বাঁচতে হবে। আমরা আমাদের রোজকার জীবনকে থামিয়ে দিতে পারি না তার জন্য! আমরা থামতে পারব না। আমাদের এগোতেই হবে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় সহ যে নিয়ম কানুন জারি করা হয়েছে, তা পালন করেই পুজো হবে। তার জন্য যদি পিক টাইমে, সন্ধে বেলা মন্ডপ বন্ধ করতে হয় তাই করব। আমাকে পুজো করতেই হবে। আমরা সোমবার সেই পুজোর বায়না দিতে গিয়েছিলাম। আমরা চাই কলকাতার বাকি বড় পুজোর উদ্যোক্তারাও এগিয়ে আসুক। দুর্গাপুজোকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজার তৈরি হয়। পুজো না হলে, বাজারটা পুরো ধ্বংস হয়ে যাবে। তাতে মারা পড়বেন হাজার হাজার গরিব মানুষ"।