Kali Puja 2021: প্রথমে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, তারপর কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যব্যাপী উৎসবের মরশুমে নিষিদ্ধ করেছে আতসবাজি। যদিও সুপ্রিম কোর্ট পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটানোর পক্ষে। তবে সেই বাজির সংজ্ঞা নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি। আর এই নিষেধাজ্ঞাকে আশীর্বাদ ধরে আলোর উৎসবের জন্য বেড়ে উঠছে মাটির প্রদীপের বিকিকিনি। শুধু বাজি নিষিদ্ধ নয়, বয়কট চিনা আলো প্রচার সাম্প্রতিককালে প্রচার ফেলেছে মানুষের মনে। তাই কালীপুজো কিংবা দীপাবলির আগে বাড়ি সাজাতে তাঁরা মাটির প্রদীপের দিকেই ঝুঁকছে। চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে জোগান দিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা।
Advertisment
উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতা-সহ দুই শহরতলির একাধিক বাজার ঘুরে এই চিত্র ফুটে উঠেছে। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কালীপুজোর সময় দুই ঘণ্টার জন্য বাজি পোড়ানোয় ছাড় দিয়েছে। তাও আবার পরিবেশবান্ধব বাজি। কী এই পরিবেশ-বান্ধব বাজি, সেই নিয়েও একটা ধন্ধ তৈরি হয়েছে। তাই বেশি জটিলতায় না গিয়ে মাটির প্রদীপ, লণ্ঠন ইত্যাদি কেনার চাহিদা তুঙ্গে।
কলকাতা লাগোয়া শহরতলি বিরাটি। সেই বিরাটি স্টেশন রোডের দুই প্রান্ত জুড়েই মাটির প্রদীপের পসার রমরমা। এক ব্যবসায়ী আবার রাস্তায় পসরা সাজিয়ে ক্রেতা সামাল দিতে না পেরে, পৃথক দোকান-ঘর ভাড়া নিয়ে ফেলেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘২০১৮ থেকে মাটির প্রদীপ কিনতে ঝুঁকছে মানুষ। ২০১৯ অবধি আমি পুজোর আগে ১০ দিন (লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে ধরলে) প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার প্রদীপ বেচেছি। সেই সময় দাম রেখেছিলাম জোড়া তিন টাকা। কিন্তু করোনার বছরে অর্থাৎ ২০২০-তে হঠাৎ চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। আগের বছর যারা আমার থেকে প্রদীপ নিয়েছিলেন, তাঁরাই ঘুরে এসে খোঁজ শুরু করেন। তাই পসার বাড়াতে বাধ্য হই। গত বছর ৫ টাকা আর ৭ টাকা জোড়া প্রদীপ বেচেছি। এবার সেই প্রত্যাশাও ছাপিয়ে গিয়েছে।‘
যদিও মাটির দামের সঙ্গে পাল্লা দিতে চলতি বছর প্রদীপের দাম একটু বেড়েছে এমনটাই জানান অপর এক ব্যবসায়ী। পাশাপাশি জোগানের সঙ্গে চাহিদার তারতম্য ঘটায় দামের হেরফের মাটির প্রদীপে। এমনটাও জানান বিরাটি স্টেশন এলাকায় প্রদীপ নিয়ে বসা বিক্রেতারা।
এদিকে, দরদাম করে প্রদীপ কিনতে আসা এক তরুণী ক্রেতার মন্তব্য, ‘আমরা যখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে চিন্তিত তখন মাটির প্রদীপ সবচেয়ে বেশি পরিবেশ বান্ধব। পাশাপাশি আমাদের রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং কুটির শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের একটু সুরাহা হয়। আলোর উৎসবকে আরও আলোকিত করতে আমি তাই গত দুই বছর ধরেই এই প্রদীপ নিচ্ছি।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন