নিউটাউনের ইকো পার্কে বরাবরই নতুন কিছু তৈরি করে সকলকে চমকে দেয় হিডকো। এবারেও তার ব্যতিক্রম হল না। ইকো পার্কের উত্তর পশ্চিম প্রান্তে গ্রাম বাংলা ও ধামসা রেস্টুরেন্টের পাশে তৈরি হওয়া একটি বিশাল আকার অর্ধচন্দ্রাকৃতি নির্মাণ ঘিরে বাড়ছে মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে কৌতুহল। অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহারে অনন্য নজির সৃষ্টি করে দেখাল হিডকো কর্তৃপক্ষ।
পরিবেশ রক্ষায় বিকল্প শক্তির প্রয়োজনীয়তা কী, তা কিভাবে মানুষের উপযোগী করে তোলা যায় তা মানুষের কাছে সহজ করে তুলে ধরার জন্যেই বনানো হয়েছে, বিশাল আকৃতির এই সৌর গম্বুজটি। এটি দেশের প্রথম সর্ববৃহৎ সৌর গম্বুজ। আগামী দিনে পৃথিবীকে বাঁচাতে এখন থেকে পরিবেশবান্ধব জিনিস ব্যবহার শুরুর গুরত্ব বোঝাতেই ইকো পার্কে এই ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হিডকোর আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, তাঁরা প্রথম থেকেই পরিবেশ বান্ধব জিনিসের ওপর কাজ করছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলি সৌরশক্তি, বায়ু শক্তি, গোবর গ্যাস থেকে উৎপাদিত শক্তি ব্যবহার করছে। এর উপকারিতা কি তা তুলে ধরাই মূল উদ্দেশ্যে। এছাড়া গ্রিন ও ক্লিন নয়া উপনগরী তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য নিউটাউনের রাস্তায় পরিবেশ বান্ধব বাস, টোটো, রিক্সা, সাইকেল চালানো হচ্ছে। সরকারি বেসরকারি অফিস বা বসত বাড়ি নির্মাণে গ্রিন বিল্ডিং নির্মাণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিকল্প শক্তি অর্থাৎ সৌর শক্তির ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন অফিসের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে।
হিডকো, এনকেডিএ ভবন, ইকো পার্কেও সোলার প্যানেলের মাধ্যমে আলো পাখা চালানো হয়। হিডকো চাইছে বিকল্প শক্তির ব্যবহার ও আগামীদিনে তার প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করুক সাধারণ মানুষও। হিডকোর ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিস সেন জানিয়েছেন, "সোলার প্যানেলের সামনে ডোমের বাইরে যাতে সকলে বসতে পারেন এবং ছবি তুলতে পারেন সেই রকম ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।"।
ইকোপার্কে তৈরি সৌর গম্বুজটি তৈরি হয়েছে ২.৮৯ একর জমির ওপর। এটি ৫৫ মিটার উঁচু, ব্যস ৪৬ মিটার। এটি তৈরি করেছে হিডকো এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। এই গম্বুজের বাইরের পুরোটাই সুদৃশ্য সোলার প্যানেল দিয়ে মোড়া। দূর থেকে দেখে এটিকে কাঁচঘর বা গ্লাসহাউজ বলেও ভুল হতে পারে। এখানে ২০০০ টি সক্রিয় সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে যা থেকে ১৮০ কিলো ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ডোমের ভিতর আলো, পাখা, কম্পিউটার, টিভি, লিফট সবকিছু চলবে সৌরবিদ্যুতের সাহায্যেই।
ডোমটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে এতে একটি থ্রিডি ভিউ পয়েন্ট থাকবে। এছাড়া গ্যালারি থেকে দাঁড়িয়ে দর্শকরা গোটা ইকোপার্কের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। পুরো প্রকল্পটিই সুইজারল্যান্ডের একটি নামী সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। মূল কাঠামোটি তৈরি করেছে ভারতের ব্রিজ অ্যান্ড রুফ কোম্পানি। আপাতত দর্শকদের জন্যে ডোমের নিচের অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে।