সোমবার রাত থেকেই অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। অক্সিজেন মাত্রা নেমে যায় ৮৫-এর নীচে। তারপরেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে হাসপাতালে তড়িঘড়ি ভর্তি করা হয় দক্ষিণ কলকাতার এক হাসপাতালে। সেই সময় তাঁর অক্সিজেন মাত্রা ছিল ৮২। এরপর মিনিটে প্রায় ৩ লিটার অক্সিজেন দিয়ে আপাতত স্থিতিশীল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। শেষ পাওয়া খবরে তাঁর অক্সিজেন মাত্রা ৯২। তবে তাঁর ফুসফুসে নতুন কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকেরা। ছ’জনের বিশেষ মেডিক্যাল টিম আলোচনায় বসেছে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। তবে অসুস্থ হলেও বুদ্ধদেবের জ্ঞান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে, আপাতত বুদ্ধদেবের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর চিকিৎসায় ছয় সদস্যের মেডিক্যাল টিম তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া সিটি স্ক্যানও করানো হয়েছে বুদ্ধদেবের। বেশ কিছু রক্ত পরীক্ষাও হয়েছে। সব পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলে আরও স্পষ্ট করে বলা যাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেমন আছেন।
বুদ্ধদেবের চিকিৎসায় দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল টিমে রয়েছেন, চিকিৎসক সৌতিক পান্ডা, কৌশিক চক্রবর্তী, সোমনাথ মাইতি, কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ধ্রুব ভট্টাচার্য। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছিল বুদ্ধদেবের। বাধ্য হয়েই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সিওপিডির সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা বাড়লে শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। তবে বুদ্ধদেবের শারীরিক অবনতির কারণ সিওপিডির সমস্যা কি না, তা এখনও জানা যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকেরা। এর পাশাপাশি বুদ্ধদেবের ফুসফুসে নতুন সমস্যা নিয়ে আপাতত রেডিওলজিস্টদের সঙ্গে কথা বলছে মেডিক্যাল টিম। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে বাইপ্যাপের সাপোর্টও দেওয়া হচ্ছে। চলছে অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্টেরয়েডও।
তবে চিকিৎসার পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মিউকোরমাইকোসিসে সংক্রমণের কথাও মাথায় রাখছেন চিকিৎসকরা। করোনার সঙ্গে মধুমেহ রোগের সমস্যা এবং স্টেরয়েড চিকিৎসা করানো হলে এই ছত্রাক সংক্রমণের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এমনটাই দাবি করছেন চিকিৎসকরা। সেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা মাথায় রেখেই চিকিৎসা চলছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। দিনে তিনবার তাঁর সুগার চেক করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে মেডিক্যাল বুলেটিনে।